জলপাইগুড়িতে পানির তোড়ে ভেসে আসছে মরদেহ, বাড়িঘরের ভাঙা অংশ

সিকিমের বন্যায় ইতিমধ্যে ১৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন
এএফপি

ভারতের সিকিম রাজ্যে পাহাড়ি ঢলের রেশ পড়তে শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এসব জেলার অনেক এলাকা ভেসে গেছে। এর মধ্যে জলপাইগুড়িতে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে একাধিক মরদেহ ভেসে এসেছে বন্যার পানির তোড়ে।
সিকিমের আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১৪ জন বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এর মধ্যে ২২ সেনাসদস্যসহ নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১০২ ব্যক্তি। এ বিপর্যয়কে একটি দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সিকিম সরকার।

গতকাল বুধবার ভোর থেকেই টানা বৃষ্টিতে সিকিমের লোনাক হ্রদ ফেটে যায়। পাশাপাশি অতি বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানির স্তর বেড়ে যায়।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া অফিস বলেছে, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় আজ মাত্রাতিরিক্ত ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার বিক্ষিপ্ত এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তরের এই তিন জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায়ও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সিকিমে আটকে পড়েছেন প্রায় তিন হাজার পর্যটক। লোহা ও কংক্রিটের সেতু ভেঙেছে ১৪টি। তিস্তায় তলিয়ে গেছে ২৫টি বাড়ি। ইতিমধ্যে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে ৩০টি। সিকিমে তলিয়ে গেছে জলকাদায় সেনার ৪১টি গাড়ি। ডেকুচু ও চুথাং-এর জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের বাঁধ ভেঙেছে।

সিকিম থেকে বাঁধভাঙা পানি ঢুকেছে জলপাইগুড়ি জেলায়। জলপাইগুড়ির গজলডোবার তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি মরদেহ।

বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে দার্জিলিং জেলার কালিম্পং। এখানকার সড়কের ১৫টি জায়গায় ধস নেমেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়ছে দার্জিলিংয়ের নদীর পানি। চলছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরানো হয়েছে প্রায় দুই হাজার মানুষকে। দার্জিলিংয়ের একটি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে দুই শতাধিক মানুষকে।

এদিকে সিকিমে আটকে পড়া পশ্চিমবঙ্গের পর্যটকদের জন্য খোলা হয়েছে রাজ্য সচিবালয় নবান্ন, রাজ্য পর্যটন দপ্তর, দার্জিলিং ও শিলিগুড়িতে কন্ট্রোল রুম।