দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের হাতে বেদম মার খেলেন ইডির কর্মকর্তারা
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলায় দুর্নীতির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের হাতে বেদম মারধরের শিকার হলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কর্মকর্তারা। এ সময় দুর্নীতির তদন্তকারী এই সংস্থার সাত কর্মী আহত হন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুধু ইডির কর্মকর্তারাই নন, দুষ্কৃতকারীদের রোষের শিকার হন সাংবাদিকেরাও। ভাঙচুর করা হয় সংবাদমাধ্যমের চারটি গাড়ি। ভাঙচুরের শিকার হয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম এবিপি আনন্দের গাড়িও। আজ শুক্রবার সকালে উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালিতে এ ঘটনা ঘটে।
সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা ও কারাগারে বন্দী রাজ্যের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ শেখ শাজাহানের বাসভবনে যান ইডির কর্মকর্তারা। এ সময় স্থানীয় তৃণমূল সমর্থকেরা তাঁদের ওপর চড়াও হন। প্রচণ্ড মারধর করেন ইডির কর্মকর্তাদের। রক্তারক্তির ঘটনা ঘটানো হয়। হামলা চালানো হয় সংবাদমাধ্যমের চার গাড়িতেও। ভাঙচুর করা হয় এবিপি আনন্দের গাড়িও। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মুঠোফোন ও ক্যামেরা। এতে ইডির সাত কর্মকর্তা আহত হন বলে জানানো হয়। এর মধ্যে তিন কর্মকর্তা গুরুতর আহত হলে তাঁদের কলকাতার সল্টলেকের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ভাঙচুর করা হয় ইডির দুটি গাড়ি ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সিআরপিএফের দুটি গাড়ি।
সিআরপিএফ সূত্রে জানা গেছে, ইডির কর্মকর্তারা মার খেয়ে পালিয়ে স্কুটারে সন্দেশখালির ফেরিঘাটে এসে সেখান থেকে পুলিশের লঞ্চে করে পালিয়ে যান। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অস্ত্র থাকলেও তারা সেই অস্ত্র ব্যবহার করেনি আজ; বরং সংঘাত এড়াতে তারা ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে।
আজ সকালে পশ্চিমবঙ্গের রেশন দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তের জন্য ইডি ১২টি জায়গায় তল্লাশি শুরু করে। এর মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা হলো এই উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালির তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ শাজাহানের বাড়ি।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি রাজ্য সরকারকে বলেছেন, রাজধর্ম পালন করুন এবং গণতন্ত্রে এই নৈরাজ্য বন্ধ করুন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ অধিকারীও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। নিন্দা করেছেন বিজেপির রাজ্য নেতারাও।