১৫ আগস্টের আগেই ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তির আশা উলফা নেতা রাজখোয়ার

শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফার) একাংশের নেতা অরবিন্দ রাজখোয়া
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ভারতের স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ১৫ আগস্টের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফার) আত্মসমর্পণ করা অংশের নেতা অরবিন্দ রাজখোয়া। ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এ কথা বলেছেন তিনি।

দুই পক্ষই আলোচনায় সন্তুষ্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া সমাধান সূত্র তাঁরা মেনে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন রাজখোয়া। তিনি বলেন, ‘পুরো বিষয়টি এখন কেন্দ্রের হাতে। এখনো হাতে কিছু সময় রয়েছে এবং আমাদের বিশ্বাস সরকার একটা সিদ্ধান্ত নেবে।’

২০১১ সালে রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন উলফার একটি অংশ আত্মসমর্পণ করে। পরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাদের শান্তি আলোচনা শুরু হয়। রাজখোয়া অবশ্য কোনো দিনই স্বীকার করেননি তিনি বা তাঁর দলের কেউ আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

তবে পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন উলফা ইনডিপেনডেন্ট (উলফা-আই) নামের অপেক্ষাকৃত ছোট সশস্ত্র গোষ্ঠীটি এখনো আত্মসমর্পণ করেনি। অতীতে রাজখোয়ার নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর নেতারা জানিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত পরেশ বড়ুয়া আলোচনার টেবিলে আসবেন না।

সংবাদমাধ্যমকে রাজখোয়া আরও বলেন, ‘তারা (কেন্দ্র সরকার) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারছে না। কারণ, তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে যে কৃতিত্ব (এই সমঝোতার চুক্তির) কে নেবে। কিন্তু আমাদের এত প্রচারের আকাঙ্ক্ষা নেই। আমরা শুধু চাই, আসামের যারা মূল নিবাসী, তাদের অধিকার সুরক্ষিত হোক। তা যদি হয় তাহলে চুক্তিতে সই করতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তারা যদি বিভ্রান্ত থাকে, তাহলে আমরা সই করব না এবং পুরো বিষয়টি আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের হাতে তুলে দেব। তারা চাইলে বিষয়টি এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

আসামে বেআইনি অনুপ্রবেশের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজখোয়া বলেন, ‘বেআইনি অনুপ্রবেশের বিষয়টি আসামের মানুষের চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণ। আমরা এই বহিরাগত সমস্যা নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। একটা উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি যে ধুবড়ি জেলায় আজকে মূল নিবাসী কোচ ও রাজবংশী সম্প্রদায় কোনো বড় ভূমিকা নিতে পারে না (কারণ তারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে)।’

একই ঘটনা আসামের তিনসুকিয়া, ডিগবয় বা গুয়াহাটি জেলার আশপাশে ঘটেছে বলে মন্তব্য করেন উলফার এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আপনার পক্ষে কি এই মানুষকে মেনে নেওয়া সম্ভব, যিনি কয়েক দশক আগে এখানে এসেছেন। কেউই মানতে পারবেন না।’

পরেশ বড়ুয়া নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী সম্পর্কে রাজখোয়া বলেন, ‘আমাদের দাবি তাদের থেকে আলাদা। তিনি (বড়ুয়া) মাঝেমধ্যে ফোনে আমাদের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ঠিকই, কিন্তু আমাদের শান্তিচুক্তির ব্যাপারে তাঁর কোনো ভূমিকা নেই।’