বুথফেরত জরিপের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগে কলকাতায় মামলা

নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহছবি: এএফপি

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগে বুথফেরত জরিপের ফল টেলিভিশনে দেখিয়ে শেয়ারবাজার থেকে ৩০ লাখ কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করে কলকাতার এক সমাজকর্মী অভিযোগ দায়ের করেছেন।

কলকাতা পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে ওই সমাজকর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামী বলেছেন, বুথফেরত জরিপের মাধ্যমে এটা প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছিল, বিজেপি নির্বাচনে জিতবে। এই তথ্য বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হয়, যা বাজারকে প্রভাবিত করে এবং দ্রুত বাজারের উত্থান হয়। এরপর বাজারের দ্রুত পতন হলে ৩০ লাখ কোটি টাকা হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন গোস্বামী।

গোস্বামীর অভিযোগ, বুথফেরত জরিপ সংস্থাগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিজেপির জয়কে অনেক বড় করে দেখিয়েছিল। সেটাকেই ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নির্বাচনের ফল ঘোষণার (৪ জুন) আগে শেয়ার কেনা প্রয়োজন।

গোস্বামী আরও অভিযোগ করেন, মোদি ও অমিত শাহর দেখানো এই প্রলোভনের কারণে বাজারে শেয়ারের মূল্য বাড়তে শুরু করে এবং তারপর বিপুল পতন হয়। আগে কিনে পরে বেচার জন্য যাঁরা কিনে রেখেছিলেন, তাঁরা এই পতন থেকে লাভবান হয়েছেন। এটা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছাড়া করা সম্ভব ছিল না।

গোস্বামী প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু এটিতে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের বিষয় রয়েছে এবং বুথফেরত জরিপের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে প্রভাবিত করার ইচ্ছাকৃত চেষ্টা রয়েছে, তাই এই মামলা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, পরিসংখ্যান মিথ্যা জানা সত্ত্বেও এবং যে সমীক্ষা সংস্থা ক্ষমতাসীন দলের হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করছে বা বিজেপির হয়ে অভ্যন্তরীণ জরিপগুলো করছে, তারাই আবার সমীক্ষা চালিয়ে বিজেপির জয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে।

গোস্বামী বলেন, ‘এই ঘটনার ফৌজদারি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি, যেহেতু শেয়ারবাজারের সাধারণ মানুষের টাকা রয়েছে এবং সেই কারণেই মামলা করা হয়েছে।’ তিনি মনে করছেন, কোন সমীক্ষক সংস্থা কতজন নমুনার ওপর সমীক্ষা চালিয়েছে বা কী পদ্ধতিতে সমীক্ষা হয়েছে—এসব তথ্য প্রকাশ্যে আশা প্রয়োজন। মামলা করার সেটাও একটা কারণ।

ভারতের গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছিল, ভারতের অন্যতম প্রধান মিডিয়া গোষ্ঠী ইন্ডিয়া টুডে এবং আজতক গ্রুপের মালিকানাধীন একটি বাংলা সম্প্রচার সংস্থার প্রচারে ‘অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া’-এর সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়েছিল, যেখানে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ৩১টি আসন দেওয়া হয়েছিল।

গোস্বামী মনে করেন, এটি একটি বড় ধরনের কারচুপি। কারণ, অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া এই নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থেকে তাদের হয়ে নির্বাচনী সমীক্ষার কাজ করেছে।