মোদি ফলাফল ঘোষণার আগেই কাজ শুরু করলেন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। দিল্লি, ২ জুন
ছবি: এএনআই

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার আগেই ‘দাপ্তরিক কাজ’ শুরু করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ রোববার সব মিলিয়ে সাতটি বৈঠক করে মোদি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নির্বাচনের ফল তাঁর দলের পক্ষেই যাচ্ছে। পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীও তিনিই হবেন।

মোদি নিজেই বৈঠকের বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ও পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্ট হয়েছে, সেই বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য বৈঠক হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে কী ধরনের কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।’

এদিকে বুথফেরত জরিপে বিজেপি এগিয়ে থাকার পর আজ দীর্ঘ বৈঠক করেছেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। তবে এই বৈঠক শুধু শীর্ষ নেতাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। ভিডিও কলে সারা দেশের প্রার্থীদের যুক্ত করা হয়। ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। বুথফেরত জরিপকে ‘ভাঁওতা’ বলে উল্লেখ করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।

মোদির সাত বৈঠক

প্রধানমন্ত্রী মোদি আজ সারা দিনে সাতটি বৈঠক করেন। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় রিমাল-পরবর্তী পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া থেকে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়া তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম ১০০ দিনে বিজেপি কী ধরনের কাজ করতে পারে বা প্রতিশ্রুতি দিতে পারে, তা-ও পর্যালোচনা করা হয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই তৃতীয় মেয়াদে কী ধরনের কাজ নতুন সরকার করতে পারে, তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছিলেন মোদি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী এবং আমলাদের কিছু দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল বিষয়টি দেখভাল করার জন্য। রোববার সেই পরিকল্পনা কিছুটা খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী মঙ্গলবার ফলাফল ঘোষণা করা হবে। পরদিন বুধবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিনটিকে ভালোভাবে পালন করতে চাইছে বিজেপি। এই বিষয়েও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে মোদি আলোচনা করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

আরও পড়ুন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। একই দিনে আরও সাতটি বৈঠক করেছেন তিনি। দিল্লি, ২ জুন
ছবি:এএনআই

কংগ্রেসের বৈঠক

কংগ্রেস অবশ্য পুরোপুরি রাজনৈতিক বৈঠকের মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রেখেছিল। ভিডিও বার্তায় আলাপ করা ছাড়াও ফলাফল ঘোষণার পরে তাদের নীতি কী হবে, তা নিয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গ, রাহুল গান্ধী, জয়রাম রমেশ, কে সি ভেনুগোপালসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা দলের লোকসভা প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

কংগ্রেসের একটি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোট গণনার দিনে কারচুপির যেকোনো প্রচেষ্টা ঠেকাতে প্রার্থী ও তাঁদের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এই ব্যবস্থা নেওয়ার অর্থ, কোনো কারচুপির চেষ্টা হলে তথ্যগতভাবে তার প্রমাণ রাখা। প্রয়োজনে প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনকে জানানো।

কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন শনিবার সন্ধ্যায় যে বুথফেরত জরিপ প্রকাশিত করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে জাল ও ভাঁওতা। তিনি বলেছেন, ‘এ ধরনের একপেশে জরিপের সবই বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) এবং বিদায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (অমিত শাহ) রচিত একধরনের মনস্তাত্ত্বিক খেলার অংশ।’

ভারতের কয়েকটি বিজেপিবিরোধী দলের নেতারাও গত দুদিন দিল্লিতে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাঁদের ভূমিকা এবং রাজনীতির দিকনির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আরও পড়ুন