চণ্ডীগড় পৌরসভা ভোটে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে: সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের সুপ্রিম কোর্টছবি: এএনআই

ভারতের চণ্ডীগড় পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। আজ সোমবার এ-সংক্রান্ত এক আবেদন মঞ্জুর করে তিনি বলেন, যা হয়েছে, তা গণতন্ত্রের প্রতি উপহাস। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।

বিতর্কিত নির্বাচনের ভিডিও ক্লিপ দেখার পর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এভাবে কি নির্বাচন পরিচালনা করা যায়? মানুষটির (প্রিসাইডিং কর্মকর্তা) সাজা পাওয়া উচিত।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কাণ্ডকারখানা দেখে তাঁরা আতঙ্কগ্রস্ত। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তিনি ক্যামেরার দিকে তাকাচ্ছেন ও ব্যালট পেপারে আঁকিবুঁকি কাটছেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বলা দরকার, সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে দেখছেন।

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, মেয়র নির্বাচনের সব কাগজপত্র, নথি ও ভিডিও সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে দাখিল করতে। ১২ ফেব্রুয়ারি এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ৭ ফেব্রুয়ারি পৌরসভার বৈঠকও স্থগিত রাখতে হবে।

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশে চণ্ডীগড় পৌরসভার মেয়র নির্বাচন হয় গত ৩০ জানুয়ারি। সেই ভোটে বিজেপির মোকাবিলায় যৌথভাবে নেমেছিল আম আদমি পার্টি (আপ) ও কংগ্রেস। ৩৫ সদস্যের পৌরসভায় দুই দলের সম্মিলিত সদস্যসংখ্যা ছিল ২০। বিজেপির পক্ষে ছিলেন ১৬ জন (স্থানীয় সাংসদ ভোটদানের অধিকারী)।

বিজেপির বিরুদ্ধে গঠিত বিরোধীদের ইন্ডিয়া জোটের এটাই ছিল প্রথম পরীক্ষা। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ইন্ডিয়া জোটের আটটি ব্যালট পেপার বাতিল করে বিজেপি প্রার্থী মনোজ সোনকরকে ১৬-১২ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি একাধিক ব্যালট পেপারে কিছু একটা লিখছেন।

ফলের বিরুদ্ধে পরাজিত আম আদমি পার্টির (আপ) মেয়র প্রার্থী কুলদীপ কুমার পরদিন ৩১ জানুয়ারি পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হননি। তিন সপ্তাহ পর আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেন। ফলে কুলদীপ কুমার সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হন।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রর এজলাসে আপ প্রার্থী কুলদীপ কুমারের হয়ে আবেদন জানান অভিষেক মনু সিংভি। তিনি বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা দলীয় কর্মীর মতো কাজ করেছেন। বিরোধীদের আটটি ব্যালট নিজের ইচ্ছেমতো বাতিল করেছেন। ভিডিও-ই তার প্রমাণ।

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আবেদনের বিরোধিতা করে বলেন, ভিডিওটি একতরফা। মাননীয় বিচারপতিরা সব রেকর্ড খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিন। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়া জরুরি, হাইকোর্ট যা করতে পারেননি।