কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা শুরু, ঢুকতে দিতে চায় না সরকার
নতুন করে শুরু হয়েছে ভারতের কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান। পাঞ্জাব ও হরিয়ানার হাজার হাজার কৃষক আজ মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু করেছেন তাঁদের দিল্লিযাত্রা। তাঁদের অন্যতম প্রধান দাবি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) আইন স্বীকৃতি। এই দাবিসহ বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁরা ২০২০ সালে দীর্ঘদিন দিল্লি অবরোধ করে রেখেছিলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এমএসপির আইনি স্বীকৃতি কৃষকসমাজ আদায় করতে পারেনি।
ট্রাক্টর ও গাড়ি নিয়ে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ যাত্রা ঠেকাতে হরিয়ানা সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। হরিয়ানা চাইছে পাঞ্জাবের কৃষকদের তাদের সীমান্তে আটকে দিতে, যাতে তাঁরা হরিয়ানা হয়ে দিল্লি আসতে না পারেন। সে জন্য আম্বালা, জিন্দ, সিরসা, ফতেহাবাদ ও কুরুক্ষেত্রে বসানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া ও কংক্রিটের বড় বড় স্ল্যাব। রাজ্যের দুটি স্টেডিয়াম সরকার দখল করেছে অস্থায়ী জেলখানা করার জন্য। কৃষকদের দিল্লিযাত্রায় যাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা না হয়, সেদিকেও রাজ্য সরকার নজর দিচ্ছে।
প্রস্তুতি শেষ দিল্লি সীমান্তেও। গতবারের অভিজ্ঞতা দিল্লি পুলিশের কাছে তেমন স্বস্তিকর ছিল না। সেই খামতি মিটিয়ে এবার নতুন করে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে দিল্লির প্রতিটি সীমান্তে। সব সীমান্তে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। আগামী এক মাস এই ধারা বলবৎ থাকবে। আনা হয়েছে জলকামান। তৈরি রাখা হয়েছে দাঙ্গা পুলিশও।
দিল্লিযাত্রার ডাক দিয়েছে কৃষকদের দুটি বড় সংগঠন সংযুক্ত কিষান মোর্চা ও কিষান মজদুর মোর্চা। তাদের সঙ্গে রয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের কৃষকসংগঠনগুলো। গত ডিসেম্বরেই এই আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল।
এরই মধ্যে গতকাল সোমবার রাতে চণ্ডীগড়ে কৃষকনেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ও কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষামন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কিন্তু এমএসপির আইনি স্বীকৃতি, কৃষিঋণ মওকুফ ও স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাব রূপায়ণ নিয়ে দুপক্ষ ঐকমত্য হতে পারেনি।
কৃষকদের বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো প্রত্যাহারে সরকার রাজি হলেও ওই তিন বিষয় অমীমাংসিত থেকে যায়। ফলে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই গতকাল রাতের বৈঠক শেষ হয়।
কৃষকনেতারা পরে বলেন, দুই বছর আগে সরকার বলেছিল, কৃষকদের অর্ধেক দাবি পূরণ করা হবে। অথচ আজও তা হয়নি। সরকার শুধুই কালক্ষেপ করে চলেছে।
এবারের কৃষক আন্দোলন গতবারের চেয়ে চরিত্রগতভাবে কিছুটা আলাদা। ২০২০ সালের আন্দোলনে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কৃষকনেতা রাকেশ টিকায়েত ও পাঞ্জাবের গুরনাম সিং চারুনি।