সুর বদলালেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী

পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী উদয়ন গুহ
প্রথম আলো ফাইল ছবি

সুর বদলে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। গত অক্টোবর মাসে তিনি বলেছিলেন, ২০১৮ সালের সবশেষ পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের নির্বাচনপদ্ধতি সঠিক ছিল না। তাঁর সেই বক্তব্য ভুল ছিল বলে এবার বলেছেন এই মন্ত্রী। দলের চাপেই মন্ত্রীর এই মতবদল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

গত অক্টোবরে উদয়ন গুহ এক প্রকাশ্য সভায় বলেছিলেন, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন যেভাবে হয়েছে, সেই পদ্ধতিই ছিল ভুল। আর সেই ভুলের জন্য ২০১৯ সালের এই রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে ব্যাপক পরাজয় ঘটেছিল তৃণমূলের। রাজ্যের ৪২ আসনের মধ্যে ২২টি আসনে জিতেছিল তৃণমূল, আর ১৮টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। বাকি দুটি আসনে কংগ্রেস। শূন্য ছিল বাম দলের আসন।

উদয়ন গুহ এ কথাও বলেছেন, ‘আমরা যেভাবে জিতেছিলাম, সাধারণ মানুষ তা মেনে নেয়নি। আমাদের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে পদক্ষেপে ভুল ছিল। সে কারণে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয় ঘটেছিল। আর এই পরাজয়ের জন্য দলের কর্মীরা দায়ী ছিলেন না। দায়ী ছিলেন মূলত কিছু নেতাই।’

গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রী উদয়ন গুহ কোচবিহারের দিনহাটার বগনীহাটে তৃণমূলের এক সভায় বললেন, ‘তৃণমূল না চাইলে বিজেপিসহ বিরোধী কোনো দল পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে পারবে না। যদি বিরোধীরা প্রার্থী দেয়, তার জন্য দলের নেতাদের শাস্তি পেতে হবে। বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে তখনই, যখন আমাদের লোকেরা বলবেন, “তোমরা দাঁড়াও, আমরা আছি।”

মন্ত্রী এ কথাও বলেছেন, ‘বিজেপির শক্তি নেই বামনহাট এলাকায় প্রার্থী দেওয়ার। যদি আমরা বিজেপিকে মদত না দিই। যদি তারা প্রার্থী দেয়, তবে দলের স্থানীয় নেতাদের শাস্তি পেতে হবে। আমরা দলকে এমনভাবে শক্তিশালী করে তুলব, যাতে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, ফরোয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দিতে না পারে, খুঁজে না পায় প্রার্থী।’

মন্ত্রী উদয়ন গুহর এই বক্তব্যের পর কোচবিহারের বিজেপি নেত্রী মালতী রাভা রায় বলেছেন, তৃণমূলের নিচু স্তরের কর্মীরা মানছেন না দলের নেতাদের। তাই তো পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মাতামাতি করছেন। কীভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে হয়, বিজেপি তা জানে।

আবার সিপিএমের কোচবিহারের নেতা শভ্রালোক দাস বলেছেন, মন্ত্রীর ওই বক্তব্য চূড়ান্ত স্বৈরতান্ত্রিক। ওরা এখন পৌরসভার ভোটের ন্যায় পঞ্চায়েত ভোটকেও প্রহসনে পরিণত করতে চায়। এবার গ্রামে গ্রামে মানুষের জোট হলে তৃণমূল নেতাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।