মমতার ‘দুয়ারে রেশন প্রকল্প’ অবৈধ ঘোষণা করলেন কলকাতা হাইকোর্ট

কলকাতা হাইকোর্ট
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

গত বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘দুয়ারে রেশ প্রকল্প’ চালু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতে কষ্ট করে দোকানে গিয়ে রেশন তুলতে হবে না গ্রাহকদের। ডিলাররাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দেবেন। গ্রাহক ভোগান্তি কম হওয়ায় প্রকল্পটি দারুণ সাড়া জাগিয়েছিল। কিন্তু এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে যায় ডিলারদের একাংশ। মামলার শুনানিতে আদালত স্থগিত করে দেয় প্রকল্পের কার্যক্রম। কলকাতা হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

রেশন ডিলারদের একাংশের দাবি, নিজস্ব যানবাহনে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছে দেওয়া কঠিন হবে। এ আপত্তি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন তাঁরা। সেদিন হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ সরকারের পক্ষে রায় দেন।

এ রায়ের বিরুদ্ধে রেশন ডিলাররা কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের শরণাপন্ন হন। বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ শুনানি করেন। শুনানি শেষে এক নির্দেশে আদালত জানিয়ে দেন, আইনের চোখে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের গৃহীত এ প্রকল্পের কোনো বৈধতা নেই। রাজ্য সরকারের এ সিদ্ধান্ত অবৈধ। এটি ভারতের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের পরিপন্থী। ফলে খারিজ হয়ে যায় দুয়ারে রেশন প্রকল্পটি।

এ বিষয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেছেন, ‘দুয়ারে রেশন প্রকল্পটি ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতার স্বপ্নের প্রকল্প। অত্যন্ত সফলভাবেই এটি কার্যকর হয়। হাইকোর্টের একক বেঞ্চ রাজ্য সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছিল। এখন ডিভিশন বেঞ্চ অন্য রায় দিল। রায়ের কপি পেয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে উচ্চতর জায়গায় আপিলের বিষয়টি তুলব।’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বছরের ১৫ নভেম্বর প্রকল্প চালুর সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন, এ প্রকল্পের জন্য প্রতি রেশন ডিলারকে প্রতি মাসে ১০ হাজার রুপি করে কমিশন দেওয়া হবে। কারণ, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে রেশন ডিলারদের অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের দুয়ারে রেশন প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে দিল্লিতেও এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু সেখানেও আদালত আপত্তি তোলেন। ফলে বাধ্য হয়ে কেজরিওয়াল সরকারও সেই দুয়ারে রেশন প্রকল্প মাঝপথে থামিয়ে দেন।