ভারতের ছত্তিশগড়ে মাওবাদীদের পেতে রাখা বোমায় ৯ নিরাপত্তাকর্মী নিহত
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-এম (সিপিআই-মাওবাদী) গেরিলাদের হামলায় অন্তত নয়জন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আটজন রাজ্য পুলিশের অধীন বিশেষ বাহিনী ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের সদস্য এবং একজন গাড়িচালক।
ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক পি সুন্দররাজ বলেছেন, স্থানীয়ভাবে তৈরি বোমা রাস্তায় পেতে রেখেছিলেন মাওবাদী বিদ্রোহীরা। পুলিশের গাড়ি সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে।
দক্ষিণ ছত্তিশগড়ের বস্তার রেঞ্জের বিজাপুর জেলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ২১ মাস পরে রাজ্যে মাওবাদী হামলায় এত নিরাপত্তাকর্মী নিহত হলেন।
সুন্দররাজ জানিয়েছেন, নিরাপত্তাকর্মীরা মাওবাদীদের বিরুদ্ধে একটি বড় যৌথ অভিযান শেষ করে সদর দপ্তরে ফেরার সময় এই বিস্ফোরণ ঘটে। যৌথ অভিযানটি চালানো হয়েছিল বস্তার রেঞ্জের মোট তিন জেলায়, যার একটি বিজাপুর।
ছত্তিশগড় রাজ্যে ২০২৪ সালে মোট ২১৯ ব্যক্তিকে মাওবাদী বলে চিহ্নিত করে হত্যা করা হয়েছে। যদিও তাঁদের সবাই মাওবাদী কি না, তা নিয়ে মানবাধিকারকর্মীদের সন্দেহ আছে। এই ২১৯ জনের মধ্যে ২১৭ জন বস্তার রেঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন।
বস্তার রেঞ্জের মধ্যে মোট সাতটি জেলা আছে, যার মধ্যে বিজাপুর অন্যতম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে আগে জানানো হয়েছিল, ২০২৪ সালে ৮০০ মাওবাদীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও ৮০২ জন আত্মসমর্পণ করেছেন। গত বছর নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ সদস্য এবং বেসামরিক ৬৫ নাগরিক নিহত হয়েছেন।
১৯৮০ সালের দিক থেকে ছত্তিশগড়ে মাওবাদী আন্দোলন চলছে। প্রধানত আদিবাসী, তপসিলি জাতির কৃষকেরা এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শহরের শিক্ষিত সমাজ আগে এই নকশালপন্থীদের যতটা সমর্থন দিতেন, এখন আর তা দিচ্ছেন না বা দিতে পারছেন না। কারণ, তাঁদের অনেককেই গত কয়েক বছরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সশস্ত্র এই আন্দোলনের জেরে ছত্তিশগড়সহ মধ্য ও দক্ষিণ ভারতে অতীতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, এখনো হচ্ছেন। এখন থেকে ২০ বছর আগে আন্দোলনের যে শক্তি ছিল, তা বর্তমানে খানিকটা কমলেও এই আন্দোলন এখনই শেষ হবে না বলে মনে করেন ভারতের পর্যবেক্ষকেরা।