গত ৩ মে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের রাজ্য মণিপুরে সংঘাত শুরু হয়
ফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের মণিপুর রাজ্যে জাতিগত সহিংসতায় ৫০ হাজার ৬৫০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। রাজ্যের ৩৫০টি শিবিরে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। মণিপুরের তথ্য, জনসংযোগ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাপাম রঞ্জন সিং রোববার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, মণিপুরের ১০টি জেলায় এসব আশ্রয়শিবির স্থাপন করা হয়েছে। শিবিরগুলো দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের।

গত ৩ মে মণিপুরে জাতিগত সংঘাত শুরু হয়। এতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন তিন শর বেশি। এর মাসখানেক পরে সহিংসতার ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে সরাসরি কথা বললেন রাজ্যের মন্ত্রী।

সাপাম সিং সাংবাদিকদের বলেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫২৬টি গোলাবারুদ সরকারের কাছে সমর্পণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি ও দুর্বৃত্তদের ধরতে সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বাহিনী সব জেলায়, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় চিরুনি অভিযান চালিয়েছে।’

মণিপুরের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ৩ মে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর চার হাজারের বেশি অস্ত্র লুট করেছিল দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রচুর পরিমাণ গোলাবারুদ রয়েছে। বিভিন্ন থানা ও নিরাপত্তাশিবির থেকে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়েছিল।

সহিংসতায় মণিপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে সাপাম রঞ্জন সিং সাংবাদিকদের বলেন, সরকার শিগগিরই শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা চালু রাখার ব্যবস্থা করবে। এ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই সরকারের পরিকল্পনার ঘোষণা করবেন শিক্ষামন্ত্রী।

ব্যাংকিং সেক্টর নিয়েও কথা বলেন রঞ্জন সিং। তিনি বলেন, সহিংসতার কারণে বিভিন্ন ব্যাংকের ২৪২টি শাখা বন্ধ ছিল। এর মধ্যে ১৯৮টি এখনো পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত চালু করা হবে।

এদিকে মণিপুরে সহিংসতার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। এ জন্য একটি মূল্য নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রঞ্জন সিং।

মণিপুরের অন্যতম প্রধান সড়ক বন্ধ করে রেখেছেন কুকি জনগোষ্ঠীর মানুষ। সড়কটি আসামে শুরু হয়ে নাগাল্যান্ডের মধ্য দিয়ে মিজোরামে যায়। প্রধান এই সড়কটি বন্ধ থাকায় মণিপুর অনেকটাই ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে গেছে। ফলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। এমন অবস্থায় দক্ষিণ আসাম থেকে ইম্ফল-জিরিবাম জাতীয় মহাসড়কের দিয়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মণিপুরে আনা হচ্ছে।

রঞ্জন সিং বলেন, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনের জন্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার রেল স্টেশনগুলোকে সক্রিয় করা হবে। ইতিমধ্যে মোরেহ-ইম্ফল, ইম্ফল-চুরাচাঁদপুর এবং ইম্ফল-কাংপোকপি থেকে হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু হয়েছে।