ভারতে পদদলিত হয়ে ১১৬ জনের প্রাণহানি
ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে পদদলিত হয়ে অন্তত ১১৬ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উত্তর প্রদেশের হাথরস জেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, হিন্দুদের দেবতা শিবের পূজা উপলক্ষে হাথরসের রতি ভানপুর গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে লোকজন সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করলে পদদলিত হয়ে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী।
আজ রাতে আলীগড় রেঞ্জের পুলিশের মহাপরিদর্শক সলভ মাথুর বলেন, পদদলিত হয়ে এখন পর্যন্ত ১১৬ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
হাথরসের জেলা প্রশাসক আশিষ কুমার সাংবাদিকদের বলেন, অতিরিক্ত জনসমাগমের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আলীগড় শহরের বিভাগীয় কমিশনার চৈত্র ভি বলেন, অনুষ্ঠানের সময় সেখানে ছিল প্রচণ্ড গরম। গরমে অতিষ্ঠ মানুষজন অনুষ্ঠান শেষে পানির জন্য একযোগে ছোটাছুটি শুরু করেন। এ সময় কাদাপানিতে একজনের ওপর অন্যজন পড়ে আহত হন। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় অনেকের।
সুরেশ চন্দ্র নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সেখানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে যে যাঁর মতো ছুটতে শুরু করেন। এতেই ঘটে দুর্ঘটনা। প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূর থেকে অনুষ্ঠানে এসেছেলিন সীমা নামের এক নারী। তিনি বলেন, তাঁর সঙ্গে আরও তিনজন স্বজন এসেছিলেন। পদদলিত হয়ে তাঁদের মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, বিভিন্ন যানবাহনে মরদেহ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। মরদেহের পাশে বসে অনেকে আহাজারি করছেন।
পুলিশ বলেছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে অনুষ্ঠানস্থলে দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাই অনুষ্ঠান শেষে লোকজন সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেন।
এ ঘটনায় আহত হয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তি বলেন, সেখানে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। বের হওয়ার কোনো উপায়ই ছিল না। এর মধ্যেই সবাই একযোগে বের হওয়ার চেষ্টা করলে, একজন আরেকজনের ওপর পড়তে থাকেন।
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ামাত্র সবাই দৌড়াতে শুরু করেন বলে জানান শকুন্তলা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন, এ সময় সড়কে ও সড়কের পাশে থাকা নালায় পড়ে যেতে থাকেন লোকজন। একজন পড়লে আরেকজন তাঁর ওপর পড়েন। এতেই অনেকের মৃত্যু হয়।
পদদলিত হয়ে মৃত্যুর এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।