নিউজক্লিক–এর সম্পাদককে গ্রেপ্তার বেআইনি: সুপ্রিম কোর্ট

গত ২৫ অক্টোবর পাতিয়ালা হাউস কোর্টে হাজির করা হয়েছিল প্রবীর পুরকায়স্থকেফাইল ছবি: এএনআই

নিউজ পোর্টাল ‘নিউজক্লিক’–এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা ছিল বেআইনি।

বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি সন্দীপ মেহতা আজ বুধবার এ রায় দেন। রায়ে বলেন, বেআইনি কাজকর্ম বন্ধ আইনে (ইউএপিএ) যেভাবে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, তা আইনসম্মত ছিল না।

শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পর প্রবীণ সাংবাদিক প্রবীর পুরকায়স্থকে নিম্ন আদালতে জামিন বন্ড জমা দিতে হবে। তারপরই তিনি মুক্তি পাবেন।

গত বছরের ৩ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চীনা সংস্থা থেকে টাকা নিয়ে ভারত সরকারের বিরোধিতার অভিযোগ আনা হয়। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে সেই থেকে তিনি ছিলেন তিহার জেলে বন্দী।

সরকার বিরোধিতার অভিযোগে ‘নিউজক্লিক’ অনেক দিন থেকেই রাষ্ট্রের নজরে ছিল। গত বছরের শেষ দিকে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ভারতীয় পোর্টালে চীনা সংস্থার অর্থায়ন রয়েছে। সে কারণে তারা চীনের হয়ে প্রচার করে। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি কাজকর্ম, সন্ত্রাসবাদী কাজ ও সে জন্য অর্থ সংগ্রহ, ষড়যন্ত্র ইত্যাদি বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়। গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ওই সংবাদমাধ্যমের দপ্তরও সিল করে দেওয়া হয়।

প্রবীরের সঙ্গে ওই পোর্টালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তিনি রাজসাক্ষী হন।

প্রবীরের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি করেন আইনজীবী কপিল সিব্বাল। গত ৩০ এপ্রিল শুনানি শেষ হলেও সুপ্রিম কোর্ট রায় স্থগিত রেখেছিলেন।

সেদিন শুনানিতে কপিল গ্রেপ্তারি আইনসম্মত ছিল না জানিয়ে বলেছিলেন, কী কারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে দিল্লি পুলিশ তা তাঁর মক্কেলকে জানায়নি। এমনকি তাঁকে (প্রবীরের আইনজীবী) না জানিয়েই দিল্লি পুলিশ তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করেছিল। প্রবীর আপত্তি করায় তদন্তকারী পুলিশ কর্তা গ্রেপ্তারের খবর তাঁর আইনজীবীকে ফোনে জানান এবং হেফাজতের নির্দেশ হোয়াটসঅ্যাপ মারফত জানিয়ে দেয়। এ নিয়ে সেদিন প্রশ্ন তুলেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। এত তাড়াহুড়া করে কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়—সেই প্রশ্নও সর্বোচ্চ আদালত করেছিলেন। বিচারপতিরা বলেছিলেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে হেফাজতের আবেদন জানানোর সময় প্রবীরের আইনজীবীর উপস্থিত থাকা উচিত ছিল।