হিন্দু জাতীয়তাবাদ নয়, দরকার তামিল জাতীয়তাবাদের

ডিএমকের সাংসদ এ রাজাফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের তামিলনাড়ুর ডিএমকের সংসদ সদস্য এ রাজা বলেছেন, তাঁর রাজ্যে হিন্দু জাতীয়তাবাদ নয়, দরকার দ্রাবিড় জাতীয়তাবাদ ও তামিল জাতীয়তাবাদ।

গতকাল রোববার তামিলনাড়ুর সালেমে আয়োজিত এক সমাবেশে এ রাজা এসব কথা বলেন।

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় আজ সোমবার রামমন্দির উদ্বোধন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই অনুষ্ঠানের আগে ডিএমকের সংসদ সদস্য এ রাজার কাছ থেকে এমন মন্তব্য এল।

এ রাজা বলেন, ধর্ম কখনো জাতীয়তা হতে পারে না। তবে ভাষা হতে পারে।

ডিএমকের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা জাতপাতের নামে বিচ্ছিন্ন হয়েছি। আর আপনারা ধর্মের নামে আমাদের এক করার চেষ্টা করছেন...। আমরা আইন অনুযায়ী ধর্মের নামে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই। কিন্তু আপনার কথামতো আমরা হিন্দু হতে চাই না। এবং সেই হিন্দু জাতীয়তাবাদও চাই না। আমাদের দ্রাবিড় জাতীয়তাবাদ ও তামিল জাতীয়তাবাদ দরকার।’ এ রাজাকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএনআই এসব তথ্য জানায়।

বিজেপিকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দেন এ রাজা। তিনি বলেন, বিজেপি ভারতে একটি হিন্দু জাতি চায়। আজ তারা (বিজেপি) হিন্দু জাতির কথা বলে। অথচ, আগে ধর্মের নামে কোনো জাতি ছিল না।

এ রাজা বলেন, ভারত থেকে পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হয়েছে। কারণ, হিন্দু মহাসভার নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর বলেছিলেন, এটি একটি হিন্দু জাতি। তাই মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন, তাঁরা একটি ইসলামিক জাতি। এবং তাঁরা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন।

তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন দল ডিএমকের প্রধান এম কে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি স্ট্যালিন গত সপ্তাহে বলেছিলেন, একটি মসজিদ ভেঙে মন্দির তৈরির সঙ্গে তাঁদের দল একমত নয়। সেখানে (অযোধ্যায়) একটি মন্দির হতে তাঁদের সমস্যা নেই। কিন্তু তাঁরা একটি মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের সঙ্গে একমত নন।

মোগল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মীর বাঁকি ১৫২৮ সালে অযোধ্যায় একটি মসজিদ তৈরি করেন, যা পরবর্তী সময়ে বাবরি মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে। হিন্দুদের দাবি, রাম জন্মভূমিতে ‘রামের মন্দির ভেঙে’ মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর করসেবকদের হামলায় মসজিদটি ধ্বংস হয়। ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিতর্কিত জমির মালিকানার রায় মন্দিরের পক্ষে দেন। সেখানেই গড়ে তোলা হয় রামমন্দির।

গতকাল ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ অভিযোগ করে বলেন, এম কে স্ট্যালিনের সরকার অযোধ্যা অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছে।

অন্যদিকে ডিএমকে সরকার বলছে, দলের যুব অনুষ্ঠান থেকে জনসাধারণের মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।