ইন্টারনেট বন্ধে ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে ভারত

ইন্টারনেট–সেবা বন্ধের প্রতীকী ছবি

ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে বিশ্বে টানা ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে ভারত। ২০২৩ সালে বিশ্বের ৩৯টি দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ২৮৩টি ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১১৬টি ঘটনাই ভারতে ঘটেছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অধিকার নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসেস নাউ ও ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে কাজ করা প্ল্যাটফর্ম কিপইটঅন কোয়ালিশন এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো ভারত সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতের মণিপুরের প্রায় ৩২ লাখ মানুষ ২১২ দিনের জন্য রাজ্যজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর প্রভাব খুবই গুরুতর ছিল, বিশেষ করে নারীদের জন্য। কারণ, ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ এবং লিঙ্গভিত্তিক অন্যান্য সহিংসতাসহ ব্যাপক নৃশংসতা নথিভুক্তি করা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা নিয়ে কাশ্মীরের সাংবাদিক অনুরাধা ভাসিনের করা মামলার রায়ের চার বছর হয়ে গেলেও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের আদেশ প্রকাশ করতে (সরকার) ব্যর্থ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এমনকি এ–সম্পর্কিত আদালতের নির্দেশ মেনে চলতেও ব্যর্থ হয়েছে বলে বলা হয়।

ভারতের অর্থনীতিতে ইন্টারনেট বন্ধের প্রভাব পড়েছে বলে অ্যাকসেস নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ কারণে দেশটির (ভারত) ১০৯ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। শুধু ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে বিদেশি বিনিয়োগে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সহিংসতা, যুদ্ধাপরাধ এবং অন্যান্য নৃশংসতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।’

ইন্টারনেট সোসাইটির প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘এক দিন পরিষেবা বন্ধ থাকলে ৩৭৯ জনকে বেকারত্বের দিকে ঠেলে দিতে পারে।’ ভারতে ৬৪টি পরিষেবা বন্ধের ঘটনা একাধিক জেলাকে প্রভাবিত করেছে।

গত বছর ইরান ও মিয়ানমারে ৩৪ বার ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর পাকিস্তান ও ইরাকে যথাক্রমে এ সংখ্যা ছিল সাত ও ছয়বার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সহিংসতা, যুদ্ধাপরাধ এবং অন্যান্য নৃশংসতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।’

ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনে যথাক্রমে ১৬ এবং ৮ বার ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে অন্যান্য দেশের সরকার ইন্টারনেটের পরিষেবা বন্ধ করলেও এই দেশ দুটিতে ‘বহিরাগতরা’ ইন্টারনেট বন্ধ করেছে বলে অ্যাকসেস নাউয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।