উত্তরাখন্ড আপাতত শান্ত, নিহত বেড়ে ৬
বেআইনি স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে উত্তপ্ত উত্তরাখন্ড রাজ্যের হলদোয়ানিতে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ছয়জন হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, নিহত ব্যক্তিদের সবাই দাঙ্গাবাজ। উত্তর ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের এই শহরে আজ শনিবার কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। জনজীবন কিছুটা স্বাভাবিক। দোকানপাট কিছু কিছু খুলেছে। তবে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনো বন্ধ রয়েছে।
গোটা ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। কুমায়ুনের কমিশনার সেই তদন্ত করবেন বলে রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে একজন সাংবাদিক রয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, দুষ্কৃতিরা কেউ রেহাই পাবে না। কারা সংঘর্ষে জড়িত ছিল, তা নিশ্চিত করতে এলাকার সব সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হলদোয়ানি শহরের বনভুলপুরা এলাকাটি মুসলমান অধ্যুষিত। সেখানে একটি মাদ্রাসা ও মসজিদ ভাঙতে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারা পুলিশ ও বুলডোজার নিয়ে হাজির হলে জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, ওই দুই স্থাপনা অবৈধ। আদালতের রায়ে সেগুলো ভেঙে দখলদার উচ্ছেদ করাই ছিল প্রশাসনের উদ্দেশ্য। কিন্তু স্থানীয় জনতা বাধা দেয়। সংঘর্ষ বাধে। শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পুলিশসহ অন্য নাগরিকদের বেশ কিছু গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। আক্রান্ত হয় এক থানাও। বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার দফায় দফায় সংঘর্ষে মোট ছয়জন নিহত হন। আহত শতাধিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ সদস্যও।
পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সংঘর্ষে যুক্ত ছিলেন এমন ১৯ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি থমথমে হলেও আপাতত নিয়ন্ত্রণে আছে। কিছু দোকানপাট খুললেও স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক শিবপাল সিং যাদব এই গোলমালের জন্য প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, গোটা দেশেই বিজেপি সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করছে। পান থেকে চুন খসতে না খসতেই বুলডোজার ব্যহার করা হচ্ছে। এর কারণে ক্ষুব্ধ মানুষ এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।