কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের পরিবার উচ্চ আদালতে এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করবে না। সঞ্জয়ের দিদি বলেন, তিনি এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করবেন না। এমনকি তিনি অভিযুক্ত ভাইয়ের সঙ্গে গিয়ে দেখাও করবেন না।
বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা হয় গত শুক্রবার বিকেলে। বিচারে দোষী সাব্যস্থ হন ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা-সিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের একমাত্র অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। বিচারক জানিয়ে দেন, তিনি তিনটি ধারায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে। আগামীকাল সোমবার এই অপরাধের শাস্তি দেওয়া হবে আদালত থেকে। শাস্তি দেওয়া হবে ভারতের ন্যায়সহিংসতার তিনটি ধারায়। ধর্ষণ ও খুনের ধারায়। এতে সঞ্জয় রায়ের সর্বনিম্ন সাজা যাবজ্জীবন ও সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। গতকাল শনিবার এই রায় প্রদান করেন কলকাতার শিয়ালদহের জেলা ও দায়রা আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস।
গতকাল কলকাতার শিয়ালদহের দায়রা আদালতে রায়ের পর সঞ্জয়ের দিদি বলেন, তাঁদের পরিবারের তরফ থেকে আদালতে কোনো আইনজীবী নিয়োগ করা হয়নি। এমনকি এই হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ভাইয়ের এই অপকর্মের জন্য কঠোর শাস্তিও দাবি করেছিলেন। যোগাযোগ রাখেননি ভাইয়ের সঙ্গেও।
এদিকে এই রায় ঘোষণার পর সঞ্জয় রায় আসামির কাঠগড়া থেকে চিৎকার করে বলেন, তিনি এ হত্যাকাণ্ড ঘটাননি। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। সঞ্জয় আরও বলেন, ‘আমি গলায় রুদ্রাক্ষের মালা পরি। এ মালা পরে আমি কি এত বড় অপরাধ ঘটাতে পারি? আমি কিছু অন্যায় করলে তো আমার রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে যেত। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’
গত ৯ আগস্ট আর জি করের ওই নারী চিকিৎসক রাতে হাসপাতালে ডিউটি করার সময় ধর্ষণের শিকার হয়ে নৃশংসভাবে খুন হন। এই খুনের অপরাধে সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে ১০ আগস্ট। ১৩ আগস্ট এই হত্যাকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্ট।
গতকাল এই রায় শুনে কেঁদে ফেলেন ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই চিকিৎসকের মা-বাবা। যদিও তাঁরা মামলার পুনঃতদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আগামী ১৭ মার্চ সেই আবেদনের শুনানি হবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে।