কাশ্মীরে তিনজনের মৃত্যুর পেছনে সেনাবাহিনীর হাত থাকার অভিযোগ

সেনা নিহত ও বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর পর কাশ্মীরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।ছবি: এএনআই

জম্মু–কাশ্মীরের পুঞ্চ-রাজৌরি এলাকায় সন্ত্রাসীদের হামলায় চার সেনাসদস্য নিহত হওয়ার পরদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল সেনাবাহিনী। গত শুক্রবার তাঁদের লাশ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সেনাবাহিনী তাঁদের হত্যা করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, সেনা জওয়ানেরা তিন বেসামরিক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিয়ে তাঁদের গায়ে মরিচের গুঁড়া লাগাচ্ছেন। তবে যাঁদের নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়েছে, তাঁরা নিহত হয়েছেন কি না, তা এখনো প্রমাণিত নয়।

নিহত একজনের এক স্বজন অভিযোগ করেছেন, তিনজনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তিনি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবারগুলোকে একটি সেনাক্যাম্প থেকে মৃতদেহ নিতে বলা হয়েছিল।

এ ঘটনা নিয়ে সেনাবাহিনী এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় বলেছে, তারা ‘তদন্ত পরিচালনায় পূর্ণ সমর্থন এবং সহযোগিতার হাত বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

জম্মু–কাশ্মীরের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগ এক্সে জানিয়েছে, এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সরকারের পক্ষে থেকেও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং স্বজনদের জন্য সমবেদনামূলক নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

নিহত ব্যক্তিরা জম্মু ডিভিশনের রাজৌরি জেলার থানামন্ডিতে ডেরা কি গালি সীমান্তসংলগ্ন এক জায়গা থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের একটি গ্রামের বাসিন্দা। এই অঞ্চলে বৃহস্পতিবার চার জওয়ানের মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে সেনাবাহিনী ওই এলাকা থেকে আটজনকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তদন্ত দাবি করেছে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি মেহবুবা মুফতি প্রশ্ন করেছেন, ‘এটা কেমন নয়া কাশ্মীর, যেখানে সেনাসদস্য বা সাধারণ মানুষ নিরাপদ নয়?’
ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং অপনি পার্টিও শ্রীনগরে বেসামরিক নাগরিক হত্যার প্রতিবাদ করেছে।

সেনাসদস্যের ওপর হামলার দায় স্বীকার করেছে পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্ট। তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের একটি শাখা হিসেবে বর্ণনা করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।