ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের প্রতিবেদন
ভারতে আগের বছরের তুলনায় ২০২৪ সালে সংখ্যালঘুবিদ্বেষী বক্তব্য বেড়েছে ৭৪ শতাংশ
ভারতে ২০২৪ সালে মুসলিমসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য আগের বছরের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেড়েছে। বিশেষ করে গত বছরে দেশটির জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এমন বক্তব্য ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। আজ সোমবার ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
২০২৪ সালে ভারতে এমন ১ হাজার ১৬৫টি উদাহরণ নথিবদ্ধ করেছে ইন্ডিয়া হেট ল্যাব, সেগুলোকে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এর আগের বছর এমন ৬৬৮টি উদাহরণ নথিবদ্ধ করেছিল তারা। বিভিন্ন রাজনৈতিক সমাবেশ, ধর্মীয় সমাবেশ, প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও সাংস্কৃতিক জমায়েতে এসব বক্তব্য দেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছেন কাশ্মীরি সাংবাদিক রাকিব হামিদ নাইক। এটি ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব অর্গানাইজড হেটের একটি প্রকল্প। বিজেপির অভিযোগ, ভারতবিরোধী চিত্র তুলে ধরে ইন্ডিয়া হেট ল্যাব। তবে সংস্থাটির ভাষ্য, তাদের প্রতিবেদন তৈরি করতে জাতিসংঘ বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের যে সংজ্ঞা দিয়েছে, সেটি অনুসরণ করা হয়েছে।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আসল বিষয়টি হলো ২০২৪ সাল ভারতে জাতীয় নির্বাচনের বছর ছিল। ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত সাত ধাপে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন ২০২৩ সালের তুলনায় (২০২৪ সালে) বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের ঘটনার ধরন তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’ এই প্রতিবেদন নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ওয়াশিংটনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস।
এই প্রতিবেদন এমন সময় প্রকাশ করা হলো, যখন কয়েক দিন বাদেই হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ভারতের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে অন্যায্য আচরণের অভিযোগ এনেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৬ মার্চ থেকে ১ জুন পর্যন্ত এক-তৃতীয়াংশ বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নির্বাচন চলছিল। বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল মে মাসে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিলে নরেন্দ্র মোদি ভারতের মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন, যাঁরা বেশি সন্তান জন্ম দিয়ে থাকেন।
গত বছর জোট গঠনের মাধ্যমে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। ইন্ডিয়া হেট ল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিজেপি ও মিত্র দলগুলো শাসিত রাজ্যে গত বছর ৮০ শতাংশ বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের ঘটনা ঘটেছে।