বন্দুক রাখার নিবন্ধন পেলেন নূপুর শর্মা
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করা বিজেপির সাময়িক বরখাস্ত নেত্রী নূপুর শর্মা বন্দুক রাখার নিবন্ধন পেয়েছেন। আত্মরক্ষার্থে তাঁকে বন্দুক রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে দিল্লি পুলিশ সূত্রের খবর।
গত বছরের ২৬ মে এক টেলিভিশন চ্যানেলে বিতর্কে অংশ নিয়ে বিজেপির তৎকালীন এই মুখপাত্র মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ওই মন্তব্যের পর নূপুর তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তিনি প্রাণনাশের হুমকি পেতে থাকেন। তাঁর মন্তব্য সমর্থনের জেরে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে এক ওষুধের দোকানি খুন হন। রাজস্থানের উদয়পুরে হত্যা করা হয় এক দরজিকেও। রাজস্থানের আজমের ও উত্তর প্রদেশের কেউ তাঁর মাথার দাম ধার্য করেন, কেউ তাঁকে হত্যার নিদান দেন। এরপর প্রাণভয়ে শঙ্কিত নূপুর আত্মরক্ষার্থে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার আবেদন জানান। দিল্লি পুলিশ সেই অনুমতি দিয়েছে।
নূপুরের মন্তব্য সমর্থন করেছিলেন দিল্লি বিজেপির মিডিয়া সেলের প্রধান নবীন জিন্দাল। ওই মন্তব্য দেশে–বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছিল। এ ঘটনায় ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে কাতার প্রথম প্রতিবাদ জানায়। ভারতের ওপর ক্রমে চাপ সৃষ্টি করে বেশ কয়েকটি দেশ। তড়িঘড়ি ভারত সরকার জানায়, নূপুরের মন্তব্য ব্যক্তিগত ও অসমর্থনীয়। ভারত সরকার সব ধর্মকে সমান দৃষ্টিতে দেখে। বিজেপিও দেরি না করে নূপুরকে ‘তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত’ সাময়িকভাবে বরখাস্ত ও নবীন জিন্দালকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট কঠোর মন্তব্য করেছিলেন। গত বছরের জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, ‘দেশে এই মুহূর্তে যা চলছে, তার জন্য তিনিই একমাত্র দায়ী। দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে তিনি একাই দেশে আগুন জ্বালিয়েছেন। দেশের কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
অবমাননাকর মন্তব্যের পর সাত মাস কেটে গেছে। নূপুরকে নিয়ে বিজেপির তদন্ত শেষ হয়েছে কি না, জানা যায়নি। তাঁর সাময়িক বরখাস্তের মেয়াদও শেষ হয়েছে কি না, দল থেকে জানানো হয়নি। নূপুর এখনো অজ্ঞাতবাসে। নবীন জিন্দালেরও একই অবস্থা। জনসমক্ষে তাঁদের দেখা যায় না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নূপুরের নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টা প্রহরার ব্যবস্থা করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে একাধিক এফআইআর দাখিল করা হলেও তিনি কোথাও হাজির হননি। তাঁর বিরুদ্ধে সব মামলা দিল্লিতেই হবে। যদিও সেই মামলার কোনো তারিখ এখনো ধার্য হয়নি।