কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন
‘অভিযোগ সঠিক নয়, শশী থারুর দুমুখো’
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের ফল গত বুধবার প্রকাশিত হয়। মল্লিকার্জুন খাড়গে পান ৭ হাজার ৮৯৭ ভোট আর শশী থারুর ১ হাজার ৭২টি।
কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী কেরালার সংসদ সদস্য শশী থারুরকে ‘দুমুখো’ আখ্যা দিলেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মধুসূদন মিস্ত্রি। দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পর্ষদের প্রধান ছিলেন তিনিই।
নির্বাচনে অনিয়মের যেসব অভিযোগ থারুর এনেছিলেন, তা খণ্ডন করে গতকাল বৃহস্পতিবার মিস্ত্রি বলেন, ‘আমাদের কাছে এসে উনি বলেছেন যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট; অথচ গণমাধ্যমের সামনে গিয়ে বলছেন তাঁর বিরুদ্ধে নাকি চক্রান্ত করা হচ্ছে। উনি দুমুখে কথা বলেছেন।’
আমাদের কাছে এসে উনি বলেছেন যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট; অথচ গণমাধ্যমের সামনে গিয়ে বলছেন তাঁর বিরুদ্ধে নাকি চক্রান্ত করা হচ্ছে। উনি দুমুখে কথা বলেছেন।মধুসূদন মিস্ত্রি, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের ফল গত বুধবার প্রকাশিত হয়। মল্লিকার্জুন খাড়গে পান ৭ হাজার ৮৯৭ ভোট আর শশী থারুর ১ হাজার ৭২টি।
প্রচারের সময় থারুর বারবার বলেছেন, লড়াইটা সমানে সমানে করতে দেওয়া হচ্ছে না; ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই। ক্রিকেটের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, এমন একটা পিচে তিনি ব্যাট করতে নেমেছেন, যা অসমান। বল ঠিকমতো ব্যাটে আসছে না।
ভোট গণনার সময়ও থারুর চিঠি লিখে ও তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট মারফত নানা অনিয়মের অভিযোগ আনেন। সংবাদমাধ্যমে গতকাল এরই জবাব দেন মিস্ত্রি। বলেন, ‘শশী থারুরের সব অভিযোগই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। কোনো সারবত্তা পাওয়া যায়নি। তাঁর অভিযোগ সঠিক নয়। অভিযোগ নিরসনে যা যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে জন্য আমাদের কাছে উনি সন্তোষও প্রকাশ করেছেন। অথচ বাইরে গিয়ে গণমাধ্যমের সামনে চক্রান্তের অভিযোগ আনছেন।’
মিস্ত্রি বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনার দুটি মুখ। একটি মুখ আমাদের সামনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। গৃহীত ব্যবস্থা যথার্থ বলেছে। অন্য মুখটি গণমাধ্যমের সামনে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের কথা শুনিয়েছে।’
এই ভোটে থারুরের নির্বাচনী প্রতিনিধি ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের তরুণ কংগ্রেস নেতা সলমন সোজ। মিস্ত্রিকে লেখা এক চিঠিতে তিনি চারটি অভিযোগ এনেছিলেন। তা হলো ব্যালট বাক্সে অননুমোদিত সিল লাগানো, পোলিং বুথে অননুমোদিত এজেন্টের উপস্থিতি, ভোটের সময় কারচুপি ও ভোটার তালিকার অনুপস্থিতি। অভিযোগ ছিল প্রধানত উত্তর প্রদেশ ও তেলেঙ্গানার প্রতিনিধিদের ভোট দেওয়া নিয়ে। সেই চিঠিতে উত্তর প্রদেশের ভোট বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছিল।
থারুরের ওই চিঠি ছিল ‘দলের অভ্যন্তরীণ’। অথচ তা গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়ে যায়। সে জন্য পরে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। মধুসূদন মিস্ত্রির পাল্টা জবাবে স্পষ্ট, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টিকে মোটেই ভালোভাবে নেয়নি।
কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা এ প্রসঙ্গে গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘দাবিমতো উত্তর প্রদেশের ভোট বাতিল হলেও কোনো অঙ্কেই থারুর জয়ের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারতেন না। প্রাপ্ত ভোটের হিসাবই বলে দিচ্ছে প্রতিনিধিরা কী চেয়েছেন, কাকে চেয়েছেন। থারুর নিজেও তা জানেন। কিন্তু এভাবে অভ্যন্তরীণ চিঠি প্রকাশ করে ও প্রকাশ্যে অভিযোগ জানিয়ে তিনি কংগ্রেসবিরোধী ও সমালোচকদের হাতই শক্ত করলেন।’