প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট, বাঘেলের ছেলে গ্রেপ্তার

ভারতের কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রছবি: রয়টার্স

হরিয়ানায় জমি কেনাবেচায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গতকাল বৃহস্পতিবার রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে ওই মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট দাখিল করেছে।

লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে আমার ভগ্নিপতি রবার্ট, বোন প্রিয়াঙ্কা ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের পাশে আছি। ১০ বছর ধরে এই সরকার আমার ভগ্নিপতিকে হেনস্তা করে চলেছে। আমি জানি, ওঁরা যথেষ্ট সাহসী। এ ধরনের রাজনৈতিক হয়রানির মোকাবিলা ওঁরা সম্মানের সঙ্গেই করবেন। সত্যের জয় হবেই।’

রবার্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৮ সালে হরিয়ানায় কংগ্রেস শাসনের সময় সাড়ে ৭ কোটি টাকায় সাড়ে ৩ একর জমি রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটি কিনেছিল জাল নথির সাহায্যে। তারপর রবার্ট তাঁর প্রভাব খাটিয়ে ওই জমির জন্য একটি বাণিজ্যিক লাইসেন্স জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু কোনো কাজই এগোয়নি। পরে সেই জমি রবার্ট ৫৮ কোটি টাকায় বিক্রি করে দেন নির্মাণ সংস্থা ডিএলএফের কাছে। ইডি এর আগে রবার্টের সংস্থার নামে থাকা বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৮ কোটি টাকা।

চার্জশিট দাখিল হওয়ার পর বরার্ট ভদ্রের সংস্থা থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সরকার কতখানি রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ, এই চার্জশিট তার প্রমাণ। রবার্ট সব সময় সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে এসেছেন। এবারও করবেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্দোষ প্রতিপন্ন হওয়ার বিষয়ে রবার্ট আত্মবিশ্বাসী। সম্মানের সঙ্গে তিনি এর মোকাবিলা করবেন।

রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের পরদিনই শুক্রবার আরেক কংগ্রেস নেতা ছত্তিশগড়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র নাথ বাঘেলের ছেলে চৈতন্যকে ইডি গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর জন্মদিনের দিন।

ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস শাসনের সময় মদ নীতি নিয়ে ইডি অনেক দিন ধরেই তদন্ত করছে। ইডির দাবি, রাজ্যের আবগারি নীতিতে দুর্নীতির পরিমাণ ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। অভিযোগ, ওই অবৈধ আয়ের একটা বড় অংশ চৈতন্য পেয়েছেন। তিনি এই দুর্নীতির অংশীদার ছিলেন।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বাঘেলও বলেছেন, পুত্রের গ্রেপ্তারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জন্মদিনের দিন চৈতন্যকে গ্রেপ্তার করার বিরুদ্ধে মুখ খুলে তিনি বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জন্মদিনের যে উপহার দিলেন, পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশ সেই উপহার দিতে পারবে না।

ইডির হাত থেকে নিস্তার পাননি সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীও। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডি এই দুই শীর্ষস্থানীয় নেতাকেও চার্জশিট দিয়েছে।