পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুরের খাদিকুল গ্রামে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত পটকা কারখানা
ছবি: এএনআই

গত কয়েক দিনে যাকে নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি, সেই বাজি (পটকা) প্রস্তুতকারক ভানু বাগ অবশেষে মারা গেলেন। পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী ওডিশা রাজ্যের এক হাসপাতালে তিনি মারা যান গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে।

পশ্চিমবঙ্গে ‘আতশবাজির রাজা’ বলে পরিচিত ভানু বাগ। পূর্ব মেদিনীপুরের খাদিকুল গ্রামের ভানুকে গত মঙ্গলবার থেকে খুঁজছিল পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ। ওই দিন তাঁর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে আটজনের মৃত্যু হয়। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুও। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনি পালিয়ে যান ওড়িশায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ জানিয়েছে।

খাদিকুল অঞ্চলের কয়েকজন প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ভানু বাগ এক ‘আশ্চর্য চরিত্র, অনেকটা সিনেমার মতো’। একেবারে দরিদ্র অবস্থা থেকে বিভিন্ন ধরনের আতশবাজি ও পটকা বানিয়ে কোটিপতি ব্যবসায়ী হয়েছিলেন ভানু বাগ। তাঁর কারখানায় কাজ করেছেন শত শত মানুষ। তিনি এমন ধরনের পটকা ও রকেট বানাতেন, যা শুনে ও দেখে মানুষ অবাক হয়ে যেত। বছর পাঁচেক আগে তাঁর কারখানাতেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ভানুর ভাই এবং স্ত্রীর। তারও আগে ১৯৯৫ সালে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল পাঁচজনের। আরও বেশ কয়েকবার ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়েছে। কিন্তু এসবের পরও থামেননি ভানু বাগ। তিনি তাঁর কাজ চালিয়ে গিয়েছেন, অর্থ রোজগার করেছেন এবং চাকরি দিয়েছেন মানুষকে। শেষ পর্যন্ত প্রাণও দিলেন সেই বাজি বানাতে গিয়েই।

ভানু বাগের সমর্থনে বক্তব্য রেখেছেন সারা বাংলা আতশবাজি ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান বাবলা রায়। রায় বলেছেন, ভানু বাগের নামে কুৎসা রটনা হচ্ছে। কিন্তু তাঁর কারখানায় কখনোই বোমা বানানো হয়নি। বানানো হয়েছে আতশবাজি।

বাবলা রায় বলেছেন, ‘শত শত মানুষকে চাকরি দিয়েছেন ভানু বাগ। তাঁর কারখানায় এক ছটাক বোমা বানানোর সরঞ্জাম পাওয়া যায়নি। অথচ তাঁর নামে যা নয়, তাই বলা হচ্ছে প্রচারমাধ্যমে। আমি বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।’

ভানুর দেহ ওডিশা থেকে কলকাতায় আনার চেষ্টা শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। ভানুর মৃত্যু হওয়ায় এ মামলার প্রধান আসামি এখন তাঁর পুত্র ও ভাইপো।