দিল্লির মেয়র পদে জয়ী আম আদমি পার্টি, হার মানল বিজেপি

অবশেষে বিজেপিকে হারিয়ে দিল্লি পৌরসভার মেয়র পদ জিতল আম আদমি পার্টি (আপ)। তিনবার ভেস্তে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে বুধবার মেয়র নির্বাচনে আপ প্রার্থী শেলি ওবেরয় ৩৪ ভোটে হারিয়ে দিলেন বিজেপির রেখা গুপ্তকে। শেলি পেয়েছেন ১৫০ ভোট, রেখা ১১৬।

ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আপ পৌর সদস্যরা উৎসবে মেতে ওঠেন। শুরু হয়ে যায় অকাল হোলি। পৌরসভার ভেতরেই আপ সদস্যরা একে অন্যকে আবির মাখিয়ে দেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া সবাইকে অভিনন্দনবার্তা পাঠান। কেজরিওয়াল টুইটে লেখেন, ‘জনতা জিতেছে, গুন্ডারা হেরেছে।’

দিল্লি পৌরসভার ২৫০ আসনের মধ্যে গত ডিসেম্বরের ভোটে আপ জিতেছিল ১৩৪টি, বিজেপি ১০৪ ও কংগ্রেস ৯টি। ৩টি ওয়ার্ডে জেতেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

শুরু থেকেই নিছক পাটিগণিত ছিল আপের পক্ষে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব বলতে শুরু করে, আপের সংখ্যা থাকলেও মেয়র হবেন বিজেপির প্রার্থী। বিজেপির শীর্ষ নেতারা এ দাবির সমর্থনে চণ্ডীগড় পৌরসভার উদাহরণও টেনে এনেছিলেন; যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা সত্ত্বেও বিজেপির প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হন। সেই দাবি থেকে শুরু সংশয়। আপ মনে করতে থাকে, বিজেপি টাকা দিয়ে কাউন্সিলর কেনার খেলায় নামবে।

সংশয় তীব্র হয় যখন দেখা যায়, কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত দিল্লির উপরাজ্যপাল বিনয় কুমার সাকসেনা প্রথমে বিজেপি সদস্যকে ‘প্রোটেম’ স্পিকার নিযুক্ত করলেন ও তারপর ১০ জন মনোনীত সদস্যকে (অল্ডারম্যান) মেয়র নির্বাচনের ভোটদানের অধিকারী করলেন। এ নিয়ে তীব্র বাদানুবাদে তিনবার মেয়র নির্বাচন ভন্ডুল হয়ে যায়।

উপরাজ্যপালের নির্দেশের প্রতিবাদ জানিয়ে এরপর আপের মেয়র পদপ্রার্থী শেলি ওবেরয় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাস ‘অল্ডারম্যান’দের ভোটদানের অধিকার নেই জানানোর পর বুধবার নির্বাচন হয়। বিজেপির ছক উল্টে দিল্লির মেয়র পদে জিতে যায় আপ। উন্নয়নের স্বার্থে কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দলের সরকার (ডাবল ইঞ্জিন) থাকার যে তত্ত্ব বিজেপি ক্রমাগত রাজ্যে রাজ্যে বিধানসভার ভোটে প্রচার করে চলেছে, সেই তত্ত্বেই কেজরিওয়াল বাজিমাত করলেন দিল্লিতে। এর ফলে দিল্লি বিধানসভা ও পৌরসভার জোড়া দায়িত্ব পেয়ে গেল আপ।

দিল্লি পৌরসভার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ২৫০ জন কাউন্সিলর ছাড়াও মেয়র পদে ভোটদানের অধিকারী দিল্লির ৭ লোকসভা ও ৩ রাজ্যসভার সদস্য। তাঁরা ছাড়া এলাকাভিত্তিক ১৪ জন বিধায়কও বাছা হয়; যাঁরা ভোটদানের অধিকারী। অর্থাৎ মোট ভোটার ২৭৪ জন। জিততে হলে দরকার ১৩৮ জনের সমর্থন। সেখানে আপ পেয়েছে ১৫০ ভোট।

আরও পড়ুন