দিল্লির মেয়র পদ লক্ষ্য বিজেপির

আপের নেতা কেজরিওয়াল
ফাইল ছবি

পৌরসভার ভোটে হেরেও দিল্লির মেয়র পদ জিততে চাইছে বিজেপি। ১৮০ ডিগ্রি ভোল বদলে মঙ্গলবার বিজেপি জানিয়েছে, দিল্লি পৌরসভার মেয়র ও ডেপুটি মেয়র পদে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দুই পদে তারা প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেছে। দিল্লি পৌরসভার মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নির্বাচন ৬ জানুয়ারি।

গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভার ভোটের সময়েই আচমকা দিল্লি পৌরসভার ভোটের দিন ঘোষণা করা হয়। তিন পৌরসভাকে মিলিয়ে দিয়ে একটিমাত্র পৌরসভা গড়ে বিজেপি এই ভোটে জিততে প্রাণপাত করেছে। তারা প্রচার শুরু করেছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভা আয়োজন করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ২৫০ ওয়ার্ডের সিংহভাগ দখল করে নেয় আম আদমি পার্টি (আপ)।

ভোটে হেরেও বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য ৭ ডিসেম্বর টুইট করে জানিয়েছিলেন, তাঁরা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সেই টুইটেই ইঙ্গিত ছিল কাউন্সিলর কেনাবেচার। অমিত মালব্য লিখেছিলেন, ‘সবকিছু নির্ভর করবে কারা কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে পারবে। মনোনীত কাউন্সিলররা কাদের ভোট দেবেন।’ তিনি মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি, চণ্ডীগড় পৌরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও বিজেপি প্রার্থীই মেয়র হন। তখনই বোঝা গিয়েছিল, মেয়র পদ লাভের জন্য বিজেপি কাউন্সিলর কেনাবেচার দিকে ঝুঁকবে।

দিল্লির সাবেক বিজেপি সভাপতি আদেশ গুপ্ত ও দিল্লি বিধানসভার বিরোধী দল নেতা রামবীর সিং বিধুরি গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন, মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নির্বাচনে দল প্রার্থী দেবে না। তাঁরা বলেছিলেন, আপ জিতেছে। মেয়র পদও তারাই পাবে। বিজেপি গঠনমূলক বিরোধিতা করবে। হঠাৎই সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসে মঙ্গলবার বিজেপি ওই দুই পদে তাদের দুই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল। মেয়র পদে শালিমার বাগ থেকে নির্বাচিত তিনবারের কাউন্সিলর রেখা গুপ্ত, ডেপুটি মেয়র পদে রামনগরের কাউন্সিলর কমল বাগড়ি। মঙ্গলবারই ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন।

আপের পক্ষে মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন ইস্ট প্যাটেল নগরের কাউন্সিলর শেলি ওবেরয়, ডেপুটি মেয়র মনোনীত হয়েছেন চাঁদনি মহলের কাউন্সিলর আলে মহম্মদ ইকবাল।

কাউন্সিলর কেনাবেচা না হলে বিজেপির জেতার কোনো সুযোগই নেই। কারণ, ২৫০ ওয়ার্ডের মধ্যে আপ একাই জিতেছে ১৩৪টি। বিজেপির আসনসংখ্যা ১০৪। নির্বাচিত কাউন্সিলররা ছাড়াও মেয়র ও ডেপুটি মেয়র পদে ভোটদানের অধিকারী দিল্লির ৭ লোকসভা ও ৩ জন রাজ্যসভার সংসদ সদস্য। এঁরা ছাড়াও প্রতিবছর স্পিকার রাজ্যের ১৪ জন বিধায়ককে পৌরসভায় মনোনীত করেন। এই ২৪ জনেরই ভোটদানের অধিকার রয়েছে। ১০ জন সংসদ সদস্যের সবাই বিজেপির। ১৪ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন আপের। আপ তার কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে পারলে বিজেপির জেতার কোনো সম্ভাবনাই নেই। তবু লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত। এর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট, আপের ঘর ভেঙে মেয়র ও ডেপুটি মেয়র পদ জিততে বিজেপি মরিয়া।

বিজেপি ভোটে হেরেও মণিপুর, গোয়া, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে অন্য দল ভাঙিয়ে বিধায়কদের এনে সরকার গঠন করেছে। চণ্ডীগড়েও এভাবে তারা মেয়র পদ দখল করেছে। এবার দিল্লিতেও কাটা হয়েছে সেই ছক।