বিজেপির টিকিট পেলেন না বরুণ গান্ধী, প্রার্থী হলেন কঙ্গনা

বরুণ গান্ধী ও কঙ্গনা রনৌতছবি: এএনআই/ইনস্টাগ্রাম

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বরুণ গান্ধীকে প্রার্থী করছে না বিজেপি। দলটি টিকিট দিল না সাবেক সেনাপ্রধান ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংকেও।

গতকাল রোববার প্রকাশিত বিজেপির পঞ্চম তালিকায় ১১১ জন প্রার্থীর মধ্যে বরুণের মা মানেকা গান্ধীর নাম অবশ্য আছে উত্তর প্রদেশের সুলতানপুর আসনে। বরুণ স্বতন্ত্র হিসেবে লড়বেন নাকি কংগ্রেসে যোগ দেবেন, সেই জল্পনা শুরু হয়েছে।

তালিকার চমক অভিনেত্রী কঙ্গনা রনৌত। বছর কয়েক ধরেই তিনি বিজেপির সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়। তারই পুরস্কার পেলেন তিনি। নিজের রাজ্য হিমাচল প্রদেশের মান্ডি থেকে এবার তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভোটেও এবার বড় করে তোলা হবে রামলহর। সে কারণে বিজেপি বেছে নিয়েছে অভিনেতা অরুণ গোভিলকে, যিনি ১৯৮৭-৮৮ সালে দূরদর্শনে ‘রামায়ণ’ সিরিজে রামের ভূমিকায় অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন।

অরুণ প্রার্থী হয়েছেন উত্তর প্রদেশের মেরঠ আসনে। উত্তর প্রদেশে বিজেপি এবার ৮০টির মধ্যে ৭৬ আসনে লড়বে। বাকি ৪টি তারা ছাড়ছে শরিকদের।

বরুণ ও মানেকাকে টিকিট দেওয়া হবে কি না, সেই চর্চা কিছুদিন ধরেই হচ্ছিল। মা ও ছেলেকে বিজেপি অবশ্য একই সঙ্গে ছেঁটে ফেলল না। কোপ পড়ল বরুণের ওপর।

বরুণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মোটেই প্রসন্ন ছিলেন না। কারণ, সরকারের নানা নীতির সমালোচনা করেছেন বরুণ। কৃষক আন্দোলনের সময় দলীয় নীতির সমালোচনা করেছেন। কোভিডের সময় অর্থনীতি ভেঙে পড়া নিয়ে সরব হয়েছেন। ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প সেনাবাহিনীর জন্য খারাপ বলেছেন। বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। খবরের কাগজে নিবন্ধ লিখেছেন।

বরুণকে ছেঁটে ফেলে বিজেপি পিলিভিট আসনে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস থেকে যোগ দেওয়া জিতিন প্রসাদকে। জিতিন ছিলেন মনমোহন সিং মন্ত্রিসভার সদস্য ও রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ।

কংগ্রেস ত্যাগী আরও এক নেতা রাজ্যসভার সাবেক সদস্য নবীন জিন্দল গতকাল রাতে বিজেপিতে যোগ দিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র থেকে প্রার্থী মনোনীত হন।

সাবেক সেনাপ্রধান ভি কে সিং আগেই গাজিয়াবাদে প্রার্থী হিসেবে দেয়াললিখন করেছেন। পোস্টার ও হোর্ডিং লাগিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তিনি সরে দাঁড়ান।

বিজেপি টিকিট দেয়নি কর্ণাটকের নেতা অনন্ত হেগড়েকেও। দিনকয়েক আগেই তিনি বলেছিলেন, বিজেপি ৪০০ আসন জিততে চাইছে সংবিধান বদলে দেবে বলে। বিজেপি তখনই তার প্রতিবাদ জানিয়েছিল। ওই মন্তব্যের খেসারত দিতে হলো অনন্তকে।

গতকাল বিজেপি অনেকটা সময় নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের প্রার্থী বাছাইয়ে। এই আসনে মোদি চেয়েছিলেন সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাকে প্রার্থী করতে। সেটা হলে দার্জিলিংয়ের বর্তমান সংসদ সদস্য রাজু বিস্তা বিদ্রোহ করবেন বলে খবর আসায় বিজেপি পিছু হটে। রাজুকেই তারা প্রার্থী করেছে। শোনা যাচ্ছে, শ্রিংলাকে রাজ্যসভায় আনা হবে।

গতকালের তালিকায় বিজেপি ৩৭ জন এমপিকে বাদ দিয়েছে। বি কে সিংয়ের মতো বাদ পড়েছেন মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবেও। রাজ্যসভায় দুবার নির্বাচিত হওয়া সদস্যদের এবার লোকসভায় দাঁড় করাতে প্রধানমন্ত্রী মোদি সচেষ্ট। শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে তাই প্রার্থী করা হয়েছে ওডিশার সম্বলপুর থেকে।

দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র দাঁড়াচ্ছেন পুরী থেকে। কর্ণাটকের নেতা জগদীশ শেট্টার বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। ভোটের পর আবার তিনি বিজেপিতে ফিরে যান। তিনি বেলগাম থেকে ভোটে লড়বেন।