ভারতের লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফায় সোমবার পশ্চিমবঙ্গের সাত আসনে ভোট হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বুথ দখল, জাল ভোট ও বিরোধী নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ–বিভ্রাটের কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে মোমবাতি জ্বালিয়েও ভোট নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বারাকপুরে (ভারতীয় জনতা পার্টি) বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিং এবং একই দলের হুগলির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় অনিয়মের অভিযোগ শুনে কেন্দ্রে যান। তৃণমূলের সমর্থকেরা এই সময় ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি দিয়ে তাঁদের নাজেহাল করার চেষ্টা করেন। জবাবে বিজেপির সমর্থকেরা ‘চোর চোর’ বলে চিৎকার দেন।
বারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংকে ছয় জায়গায় হামলা করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। একই দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে হাওড়ায় সিপিএম এজেন্ট এবং উলবেড়িয়ার পঞ্চসায়রে কংগ্রেসের এজেন্টকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে চন্দ্রকোনায় তৃণমূলকে হটাতে লাঠিপেটা করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
দুপুরে বারাকপুরের মণ্ডলপাড়ায় বিজেপি নেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে স্লোগান দেন তৃণমূলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।
হাওড়ার একটি বুথে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে মারধর করেন তৃণমূলের সমর্থকেরা। তারকেশ্বরে বুথ জ্যাম করে রাখেন তৃণমূল বাহিনীর সদস্যরা। ধনিয়াখালীতে বিজেপির কর্মীদের মারধর করে তৃণমূল। রূপনগরে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। গয়েশপুরে বিজেপির এক কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন তৃণমূলের কর্মীরা। আহত অবস্থায় ওই কর্মীকে কল্যাণীর এইমস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বলাগড়ে তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস ভাঙচুর করেন বিজেপির সমর্থকেরা। লিলুয়ার এক ভোটকেন্দ্রে একটি রাজনৈতিক দলের এজেন্ট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গৌতম মান্নাকে মারধর করেন।
হাওড়ার বেলুরের আসনে বোমা ছোড়া হয়। খানাকুলে হামলার অভিযোগে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উত্তর চব্বিশ পরগনার গাইঘাটার একটি ভোটকেন্দ্রে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে মোমবাতি জ্বালিয়ে ভোট গ্রহণ করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফায় একজন এবং ষষ্ঠ দফায় দুজনের মৃত্যু হয়েছিল। তবে এবার পঞ্চম দফা পর্যন্ত এখনো কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
পশ্চিমবঙ্গে সোমবার ভোট হওয়া সাত আসন হলো বনগাঁ, বারাকপুর, হাওড়া, উলবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, হুগলি ও আরামবাগ। সাত আসন ভোটকেন্দ্র ছিল ১৩ হাজার ৪৮১টি। এর মধ্যে স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্র ছিল ৭ হাজার ৭১১টি। মোট প্রার্থী ছিলেন ৮৮ জন।