যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ রক্ষার দাবিতে মমতাকে স্মারকলিপি

গাছ কাটা বন্ধের দাবিতে কলকাতার ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়
ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ রক্ষার দাবি জানিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মারকলিপি দিয়েছেন কলকাতার বিশিষ্টজনেরা। গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় নবান্নে কলকাতার মানবাধিকার সংস্থা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর) এ স্মারকলিপি দেয়।

এপিডিআরের সভাপতি মানস দাস, সম্পাদক বাপ্পা ভূঁইয়াসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যের মুখ্য সচিবের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, অবিলম্বে যশোর রোডের ঐতিহাসিক শতবর্ষী গাছ না কেটে বরং তা নিয়মিত পরিচর্চা করে রক্ষা করা হোক। প্রয়োজনে এই গাছ রক্ষার জন্য বিকল্প সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের যশোর থেকে কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত ১২৫ কিলোমিটারের সড়কটি যশোর রোড নামে পরিচিত। অবশ্য বাংলাদেশের অংশটুকু যশোর-বেনাপোল সড়ক নামে পরিচিত হলেও পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত এই সড়ককে যশোর রোড নামেই জানে মানুষ।

যশোর রোডের ৩৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই যশোর রোড হয়ে উঠেছিল এক জীবন্ত ইতিহাস। এই সড়ক পাড়ি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর মোকাবিলা করেছেন। এই সড়কের পাশে অনেক মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প ও শরণার্থীশিবির গড়ে উঠেছিল।

যশোর রোডের উভয় পাশে রয়েছে চার হাজারের বেশি শতবর্ষী গাছ। বারাসাত থেকে বনগাঁ সীমান্ত পর্যন্ত যশোর রোডের ওপর পাঁচটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরির জন্য শতবর্ষী ৩০৬টি গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হলে এলাকাবাসী সোচ্চার হয়।

গাছ কাটার ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় এপিডিআর। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিলে ওভারব্রিজ করার স্বার্থে আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শর্ত সাপেক্ষে সুপ্রিম কোর্ট গাছ কাটার অনুমতি দিলে আবার সোচ্চার হয় মানবাধিকার সংগঠনটি।

এর আগে গত রোববার বিকেলে বনগাঁ শহরের ১ নম্বর রেলগেট এলাকায় এপিডিআরের ডাকে প্রতিবাদ সভাও অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া গাছ কাটা বন্ধের দাবিতে ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির পাদদেশে মানববন্ধন হয়েছিল।