সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে বাঘ গণনা শুরু

ফাইল ছবি

ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও ইউনেসকো স্বীকৃত ঐতিহ্যবাহী সুন্দরবনের ভারতীয় অংশে (পশ্চিমবঙ্গে) আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর) শুরু হলো এবারের প্রথম পর্যায়ের বাঘ গণনা। সুন্দরবনের দুটি ডিভিশনে ১ হাজার ১৪৬টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসিয়ে শুরু হচ্ছে বাঘ গণনা। আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ বাঘ গণনার কাজ। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের বাঘ গণনার কাজ চলবে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গঙ্গাসাগর মেলার পর।

রাজ্যের বন বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে ২ হাজার ৫৮৫ বর্গকিলোমিটার জঙ্গলে বসানো হয়েছে বাঘ গণনার ট্র্যাপ ক্যামেরা। ফলে এ বাগ গণনার আওতায় চলে আসবে বাঘ অধ্যুষিত সুন্দরবনের জঙ্গল।

এ গণনার লক্ষ্যে বাঘের ছবি তোলার জন্য এবং বাঘকে ক্যামেরার সামনে আনার জন্য পচা মাংসে ডিম মেখে রাখা হবে। এ পচা মাংস বাঘের খুব প্রিয়। বন বিভাগ বলেছে, এ পচা মাংসের টানে বাঘ চলে আসবে ক্যামেরার কাছে। তারপর ট্র্যাপ ক্যামেরায় উঠে আসবে বাঘের ছবি। এসব ছবি বিশ্লেষণ করে বন বিভাগ নিশ্চিত হতে পারবে কত বাঘ রয়েছে এ সুন্দরবনে।

বন বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে, এবার এ বাঘ গণনার কাজে ২০০ জন প্রশিক্ষিত কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরাই জঙ্গল ঘুরে ঘুরে ট্র্যাপ ক্যামেরা গাছের সঙ্গে লাগিয়েছেন। আর এ গণনার কাজ হবে এবার এম-স্ট্রাইপ অ্যাপে। গত বছরও এভাবে বাঘ গণনা হয়েছিল। তাতে ভালো সাড়াও মিলেছিল।

বন বিভাগের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেছেন, এবার বাঘ ছাড়াও অন্যান্য প্রাণীও গণনা করা হবে। এ লক্ষ্যে সুন্দরবনের গাছে লাগানো হচ্ছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। এ ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি বিশ্লেষণ করে বন বিভাগ নির্ধারণ করতে পারবে কত বাঘ আছে এ সুন্দরবনে।

এর আগে অবশ্য এই সুন্দরবনে বিলুপ্ত প্রায় মেছো বিড়াল বা বাঘরোলের জরিপ করা হয়। এ মেছো বিড়াল বা বাঘরোল আকারে বাঘের থেকে ছোট হলেও দেখতে অনেকটাই বাঘের মতো। রয়েছে এর গায় বাঘের মতো ছাপ বা ডোরা কাটা। এ জন্য বিড়াল প্রজাতির এ প্রাণী মেছো বিড়াল বা বাঘরোল হিসেবে পরিচিত। এখন বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত প্রায় এ জাতের প্রাণীটিকে নিয়ে গবেষণা চলছে ভারতে।

ভারতে রয়েছে এই সুন্দরবনের মোট এলাকার ৩৮ শতাংশ সুন্দরবন আর বাংলাদেশে রয়েছে ৬২ শতাংশ সুন্দরবন এলাকা। এত দিন ভারতীয় অংশের সুন্দরবনে কত বাঘ রয়েছে, তা নিয়ে প্রায় প্রতিবছরই বাঘশুমারি হয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৯-২০ সালের শুমারিতে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনে মিলেছে ৯৬টি বেঙ্গল টাইগারের সন্ধান।