ভারতে ৯২ বছরে স্কুলে পড়াশোনা শুরু করলেন সালিমা, নিয়ে যান নাতবউ
১৯৩১ সালের আশপাশে জন্ম সালিমা খানের। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন শেষ হওয়ার দুই বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তখন তিনি ১৪ বছরের কিশোরী। সে সময় তাঁর গ্রামে কোনো স্কুল ছিল না। কিন্তু তাঁর জীবনভর ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শিখবেন। সেই স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়েছে।
৯২ বছর বয়সে এসে তিনি এখন স্কুলের শিক্ষার্থী। নিয়মিত ক্লাস করেন। এরই মধ্যে পড়তে ও লিখতে শিখেছেন। শুধু নিজেই পড়ছেন এমন নয়, তাঁর সঙ্গে অন্যদের যোগ দিতেও উৎসাহ দিচ্ছেন। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমের খবরের পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। উত্তর প্রদেশ রাজ্যের বুলান্দশহরের বাসিন্দা সালিমা খান এখন প্রমাতামহ (নানি বা দাদির মা)। তাঁকে স্কুলে নিয়ে যান তাঁর নাতবউ।
সালিমা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমি মুদ্রার নোট চিনি না। সেই সুযোগে নাতি-নাতনিরা ভুল বুঝিয়ে আমার কাছ থেকে অনেক বেশি রুপি নিয়ে যেত। এখন আর সেই সুযোগ নেই। সেসব দিন এখন অতীত।’ ২০১১ সালের সরকারি হিসেব অনুযায়ী ভারতের সাক্ষরতা হার প্রায় ৭৩ শতাংশ।
স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা লক্ষ্মী পান্ডে এএফপিকে বলেন, তাঁর (সালিমা) এই চেষ্টাই বলে দেয়, লেখাপড়া শেখার কোনো বয়স নেই। পান্ডে বলেন, সরকারি শিক্ষা কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকদের পক্ষ থেকে সালিমা খানকে সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী বলে অভিহিত করার পাশাপাশি তাঁকে স্কুলে যেতেও উৎসাহ জোগায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রতিভা শর্মা বলেন, প্রথম দিকে সালিমা খানকে পড়াতে গিয়ে শিক্ষকেরা দ্বিধান্বিত ছিলেন। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি তাঁর যে ‘আগ্রহ’ তা শিক্ষকদের মন জিতে নিয়েছে। প্রধান শিক্ষক প্রতিভা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘তাঁকে না করার মতো হৃদয় আমাদের নয়।’
সালিমা স্কুলে যাওয়ার পর থেকে গ্রামের আরও ২৫ জন নারী গণশিক্ষা কার্যক্রমে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তাঁর দুই পুত্রবধূও রয়েছেন।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন কিমানি এনগ্যাং মারুগে নামে কেনিয়ার এক নারী। ২০০৪ সালে যখন তিনি তালিকাবদ্ধ হন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৮৪ বছর।