খেলতে গিয়ে ফুটবল নষ্ট, ৪৫ শিশুকে ২ দিন খাবার না দিতে নির্দেশ হোস্টেল সুপারের

ফুটবল নষ্ট করে ফেলায় শিশুদের খাবার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রতীকী ছবি: রয়টার্স

আবাসিক একটি স্কুলে ছোট ছোট শিশু পড়াশোনা করে। প্রতিদিন ক্লাস শেষে দুপুরে বিশ্রাম নেয়। এরপর বিকেলে ফুটবল নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে। একদিন খেলতে খেলতে ফুটবল ফেটে যায়। এ খবর পৌঁছে যায় হোস্টেল সুপারের কানে। শাস্তি হিসেবে ৪৫ শিক্ষার্থীকে দুই দিন খাবার না দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের একটি মিশনারি স্কুলে। এমন অমানবিক আচরণ করায় হোস্টেল সুপারের পদত্যাগ ও শাস্তি দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিশুদের অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন। প্রাথমিক তদন্তে হোস্টেল সুপার পিটার সাদমের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

ছত্তিশগড়ের সুরুজপুরে স্কুলটির অবস্থান। আম্বিকাপুর বিশপ হাউস এটি পরিচালনা করে। স্কুলটিতে ২১ জনের আবাসনসুবিধা থাকলেও মাত্র দুটি কক্ষে গাদাগাদি করে ১৪১ শিক্ষার্থী থাকে, যাদের বেশির ভাগই দরিদ্র পরিবারের সন্তান।

ফুটবল নষ্ট করার ‘অপরাধে’ খাবার বন্ধ করে দেওয়ায় বিপদে পড়ে যায় শিক্ষার্থীরা। পরে স্থানীয় লোকজন বিস্কুটসহ বিভিন্ন শুকনা খাবার পৌঁছে দেয়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিশুদের খাবার বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাটি জানাজানি হয়।

জানা যায়, ঘটনাটি গত ২৮ আগস্টের। ওই দিন বিকেলে শিশুরা খেলতে গেলে ফুটবল ফেটে যায়। এতে রেগে যান ফাদার পিটার সাদম। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি শিশুদের খাবার বন্ধ করে দেন বলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফুটবল ফাটিয়ে ফেলায় শিশুদের অনুশোচনা করা উচিত বলে সতর্ক করেন হোস্টেল সুপার। এ জন্য শিশুদের ভুগতে হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনার তদন্তে যুক্ত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে হোস্টেল সুপার পিটার সাদম বলেন, ‘আমরা শিশুদের জন্য খেলাধুলার সব সামগ্রীর ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তারপরও শিশুরা জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলে। কীভাবে লড়াই করে টিকে থাকতে হয়, তাদের তা শেখা উচিত। শুধু তা–ই নয়, খারাপ কাজের জন্য তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা তাদের দুই বেলা খেতে দিইনি। দুই দিন অভুক্ত রাখার অভিযোগ ঠিক নয়।’

এমন ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ও শিশুদের অভিভাবকেরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। এই সুপারের অধীন শিশুরা নিরাপদ নয়—এমন অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।

তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ফাদার পিটার সাদমকে স্কুলের সব ধরনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশপ হাউস। তাঁকে আম্বিকাপুরের সদর দপ্তরে বদলি করা হয়েছে।