আসামের সংখ্যালঘু নেতা আজমল কেন রাহুলকে আক্রমণ করলেন

বদরুদ্দিন আজমলফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের আসাম রাজ্যের দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এআইইউডিএফ) প্রধান বদরুদ্দিন আজমল বলেছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আসন্ন প্রচার কর্মসূচি আসামের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলবে না।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ২০২২ সালের মতো ১৪ জানুয়ারি উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর থেকে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ শুরু করবেন। এ পর্যায়ে পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ১১১টি জেলাজুড়ে প্রায় ৬ হাজার ৭১৩ কিলোমিটার পথ ঘুরবেন রাহুল।

কংগ্রেসের এ পদযাত্রায় বিশেষ কোনো লাভ হবে বলে মনে করেন না এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল।

পশ্চিম আসামের বড়পেটা জেলায় গত শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এআইইউডিএফ সভাপতি মাওলানা বদরুদ্দিন আজমল বলেন, ‘রাহুল গান্ধী নেহরু পরিবারের সদস্য। তিনি যেখানেই যান, লোকেরা তাঁকে একধরনের নায়ক হিসেবে দেখতে ভিড় করেন। তবে এই ভিড় কংগ্রেসের ভোটে পরিণত হবে না।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, মাওলানা আজমল অতীতেও এমন মন্তব্য করেছেন, যাতে বিজেপির সুবিধা হয়েছে। অসুবিধা হয়েছে বিজেপিবিরোধী দলগুলোর। আসাম রাজ্যে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। ফলে এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, আজমল ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের মন্তব্য করছেন কি না, যাতে বিজেপির সুবিধা হয়ে যাচ্ছে।

আসামে মুসলমান জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশ এবং ১৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে চারটিতে মুসলমান ভোট জয়-পরাজয়ে নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েক নির্বাচনে মুসলমান ভোট অনেক ক্ষেত্রে ভাগ হয়েছে এআইইউডিএফ ও কংগ্রেসের মধ্যে, যাতে লাভ হয়েছে বিজেপির।

এ কারণে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি সংবাদপত্র গতকাল রোববার প্রশ্ন তুলেছে, মাওলানা আজমল শেষ পর্যন্ত কাদের জন্য কাজ করেন—বিজেপিবিরোধী দলগুলোর জন্য নাকি বিজেপির জন্য?

একই সুরে আজমলকে আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র ববিতা শর্মা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, কংগ্রেস এআইইউডিএফকে ইন্ডিয়া জোটে অন্তর্ভুক্ত করেনি বলে আজমল রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন।

ববিতা শর্মা বলেন, তিনি জোটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনেক চেষ্টা করেও স্থান পাননি। কারণ, তাঁর প্রকৃত চরিত্র সম্পর্কে এখন সব দলই অবগত। এতে কংগ্রেসের কোনো অসুবিধা হবে না। কারণ, সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছেন, বদরুদ্দিন আজমল ও এআইইউডিএফ বিজেপির বি টিম হিসেবে কাজ করছেন।

এআইইউডিএফ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে আসামে একটি আসন জিতেছিল। ২০১৪ সালে জিতেছিল তিনটি আসন। অর্থাৎ মুসলমানপ্রধান এআইইউডিএফের জনভিত্তি কমছে। কিন্তু কংগ্রেস ২০১৪ ও ২০১৯—দুবারই তিনটি করে আসন পেয়ে তাদের অবস্থান ধরে রেখেছে।