যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে হঠাৎ চীনের সঙ্গে কেন সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে ভারত
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যাহ্নভোজ বৈঠক নতুন করে ভারতে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গোপনে কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। পাশাপাশি বিকল্প কৌশল হিসেবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের উদ্যোগও নিচ্ছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ট্রাম্প প্রশাসন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম প্রধান অংশীদার দেশটির বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের কথা বিবেচনা করছে। এমন পরিস্থিতিতে আসিম মুনিরের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক এবং অন্যান্য উত্তেজনা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক আলোচনাকে চাপের মুখে ফেলেছে।
পাকিস্তান, বিশেষ করে তাদের সামরিক বাহিনী আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছে ভারত। দেশটির তিন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দিয়েছে, ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে কাছে টেনে নেওয়ার মাধ্যমে তারা ভুল বার্তা দিচ্ছে।
ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা ভবিষ্যতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
তবে ভারতীয় লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো সন্ত্রাসীদের সহায়তা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। দেশটি বলেছে, নয়াদিল্লি এখনো কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি যে পাকিস্তান এতে জড়িত।
গত দুই দশকে সামান্য প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক মজবুত হয়েছে। এর পেছনে অন্তত একটি কারণ হলো, দুই দেশের চীনবিরোধী অবস্থান।
ওয়াশিংটনভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, বর্তমান সমস্যাগুলো একটু ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ঘন ঘন এবং গভীরভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে জড়াচ্ছে এবং ভারতের উদ্বেগগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর, তাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কিছুটা অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে।
মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ‘এবার যেটা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সেটা হচ্ছে ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত আচরণ। ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কনীতি নিয়ে নতুন প্রস্তাব দেওয়ার কারণে সেই উত্তেজনা আরও বিস্তৃত হয়েছে।
বর্তমান সমস্যাগুলো একটু ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ঘন ঘন এবং গভীরভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে জড়াচ্ছে এবং ভারতের উদ্বেগগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর, তাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে কিছুটা অসন্তোষ তৈরি হচ্ছেমাইকেল কুগেলম্যান, জ্যেষ্ঠ গবেষক, এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তারা সাড়া দেয়নি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগেই বলেছিল, তারা ট্রাম্প ও আসিম মুনিরের বৈঠকের বিষয়টি ‘আমলে নিয়েছে’।
মার্কিন এক কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা ব্যক্তিগত কূটনৈতিক যোগাযোগ বা আলাপের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেন না। যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তান—দুই দেশের সঙ্গেই দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখে।
মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘এসব সম্পর্ক নিজের গুরুত্ব ও যোগ্যতায় দাঁড়িয়ে আছে। আমরা এক দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি না।’
হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজ
গত মে মাসে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংক্ষিপ্ত সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে ঘিরে ভিন্ন এক কৌশল নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত দাবি করেছিল, কাশ্মীরে হিন্দু জনগোষ্ঠীর পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার প্রতিশোধ নিতে তারা সীমান্তের ওপারে জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে।
চার দিন ধরে যুদ্ধবিমানের লড়াই, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারত ও মুসলিমপ্রধান পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে তিনটি বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে। এর মধ্যে দুটি হয়েছে কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে বিরোধের জেরে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে ছোটখাটো সংঘর্ষ লেগেই আছে।
আসিম মুনিরের হোয়াইট হাউস সফর নিয়ে ভারতের বিরক্তি আরও বেড়ে যায়। কারণ, ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, তিনিই বাণিজ্য আলোচনা বন্ধের হুমকি দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ আটকেছেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মোদি।
গত মে মাসের সেই সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ পরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রণ জানান। এটি ছিল পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের এক বড় অগ্রগতি। কারণ, ট্রাম্পের আগের মেয়াদ এবং বাইডেনের শাসনামলে এই সম্পর্ক অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিল।
এই প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে হোয়াইট হাউসে ডেকে নিলেন। তা–ও এমনভাবে যে তাঁর সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তা ছিলেন না। পাকিস্তানে অবশ্য সেনাপ্রধানকেই সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ভারতের নেতারা দাবি করছেন, ভারত ও পাকিস্তান নিয়ে মুনিরের দৃষ্টিভঙ্গি পুরোপুরি ধর্মভিত্তিক। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মে মাসে কাশ্মীর হামলা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ধর্ম জেনে পরিবারের সদস্যদের সামনে পর্যটকদের হত্যা করা হয়েছিল।’
জয়শঙ্কর দাবি করেন, এটি বুঝতে হলে দেখতে হবে, পাকিস্তানি নেতৃত্ব বিশেষ করে তাদের সেনাপ্রধান একজন চরম ধর্মীয় মনোভাবসম্পন্ন ব্যক্তি।
অন্যদিকে পাকিস্তান অভিযোগ করছে, আসিম মুনির নন, বরং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই ধর্মীয় উগ্রবাদী মতবাদে পরিচালিত হচ্ছেন। আর তাঁর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকারকে পদদলিত করছে।
তবে নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকার বারবার দাবি করে আসছে, তারা কোনো সংখ্যালঘুর প্রতি বৈষম্য করেন না।
ভারতীয় কর্মকর্তারা ও শিল্প–বাণিজ্য সংগঠনের একজন লবিস্ট বলেন, একসময় ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে প্রকাশ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখা যাওয়া সত্ত্বেও এখন ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য আলোচনার গতি বেশ ধীর হয়ে পড়েছে।
আসিম মুনিরের হোয়াইট হাউস সফর নিয়ে ভারতের বিরক্তি আরও বেড়ে যায়। কারণ, ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, তিনিই বাণিজ্য আলোচনা বন্ধের হুমকি দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ আটকেছেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মোদি। তিনি ট্রাম্পের দাবির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এসেছিল দুই দেশের সেনাপ্রধানদের আলোচনার মাধ্যমে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নয়।
ভারতের দুই কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জুন মুনিরের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর মোদির দপ্তর ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দপ্তরের কর্মকর্তারা আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানান। অবশ্য ভারতের এই প্রতিবাদের খবর আগে প্রকাশ হয়নি।
একজন ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘সীমান্তের ওপারের সন্ত্রাসের বিষয়ে আমাদের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের জন্য একদম স্পষ্ট “লাল রেখা”। এই সময়টা বেশ জটিল...ট্রাম্প আমাদের উদ্বেগ বুঝতে না পারায় দুই দেশের সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন তৈরি হচ্ছে।’
ভারতের ওই কর্মকর্তা স্পর্শকাতর বিষয় বলে এসব নিয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসিম মুনির ও ট্রাম্পের মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তান ন্যাটো–বহির্ভূত মিত্র হওয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার আওতায় যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে আগেও অস্ত্র দিয়েছে। এ ছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক আরও কীভাবে জোরদার করা যায়, সেটি নিয়েও আলোচনা হয়।
এই কারণে দিল্লির উদ্বেগ বেড়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে অস্ত্র পাবে, ভবিষ্যতে আবার দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ লাগলে, তা ভারতের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হতে পারে।
কঠোর অবস্থান
ভারতীয় কর্মকর্তারা ও শিল্প–বাণিজ্য সংগঠনের একজন লবিস্ট বলেন, একসময় ট্রাম্প ও মোদির মধ্যে প্রকাশ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দেখা যাওয়া সত্ত্বেও এখন ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছুটা কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য আলোচনার গতি বেশ ধীর হয়ে পড়েছে।
গত জুনে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি৭ বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু মোদি সেই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন।
চলতি মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেয় ভারত। এতে বোঝা যায়, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা আগের মতো মসৃণভাবে এগোচ্ছে না, বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের পর থেকে।
ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন নামের চিন্তন প্রতিষ্ঠানের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান হর্ষ পন্ত বলেন, অন্যান্য দেশের মতো ভারতও ট্রাম্পকে সামাল দেওয়ার উপায় খুঁজছে এবং বিকল্প হিসেবে চীনের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক সাজাচ্ছে।
হর্ষ পন্ত বলেন, নিশ্চিতভাবেই চীনের সঙ্গে একটি যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। আমার মনে হয়, এটা দুই পক্ষ থেকেই হচ্ছে...চীনও ভারতের দিকে এগিয়ে আসছে।
সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বেইজিং সফর করেন। ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘর্ষের পর এটি ছিল তাঁর প্রথম চীন সফর। সেবার ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ হয়েছিল।
২০২০ সালের সংঘর্ষের পর ভারত চীনের বিনিয়োগে যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, সেটা কিছুটা শিথিল করার উদ্যোগও নিচ্ছে।
চীনের সঙ্গে সম্পর্কে কিছুটা বরফ গললেও ভারতের জন্য পরিস্থিতি সহজ নয়। কারণ, চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে সব সময়ই টানাপোড়েন রয়েছে। চীন আবার পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সামরিক সহায়তাকারী।
চীনের সঙ্গে ট্রাম্পের কখনো বন্ধুত্বপূর্ণ, আবার কখনো শত্রুভাবাপন্ন আচরণে ভারতের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সেটাই চীনের প্রতি ভারতের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কিন্তু চীনের সঙ্গে ট্রাম্পের কখনো বন্ধুত্বপূর্ণ, আবার কখনো শত্রুভাবাপন্ন আচরণে ভারতের উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সেটাই চীনের প্রতি ভারতের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন আনতে বাধ্য করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউইয়র্কের আলবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্ল্যারি বলেন, হোয়াইট হাউসে এমন একজন অপ্রত্যাশিত ‘চুক্তিবাজ’ প্রেসিডেন্ট থাকার ফলে নয়াদিল্লি কখনোই যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের হঠাৎ ঘনিষ্ঠতা পুরোপুরি উড়িয়ে দিতে পারবে না।
ক্রিস্টোফার আরও বলেন, ভারত চিন্তিত, কারণ চীন শুধু পাকিস্তানকেই সাহায্য করছে না; বরং বাংলাদেশের মতো ভারতের আশপাশের এলাকাগুলোতেও তাদের প্রভাব বাড়ছে। পরিস্থিতির কারণে নয়াদিল্লি এখন এই সিদ্ধান্তেই এসেছে, চীনের প্রভাব বৃদ্ধির জবাব হিসেবে সরাসরি চীনের ওপর চাপ না দিয়ে আশপাশের প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপরই বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত।