বিজেপির সমালোচক হর্ষ মান্দেরের সংস্থায় তল্লাশি

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় এক বিক্ষোভে সমর্থকদের সঙ্গে হর্ষ মান্দেরফাইল ছবি: এএনআই

ভারতের সামাজিক আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা এবং সাবেক সরকারি কর্মকর্তা হর্ষ মান্দেরের বাসভবন ও কার্যালয়ে সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। অভিযোগ, তিনি বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন (এফসিআরএ) লঙ্ঘন করেছেন।

হর্ষ মান্দেরের বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ‘সেন্টার ফর ইকুইটি স্টাডিজ’-এর (সিইএস) বিরুদ্ধে গত ৩১ জানুয়ারি ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করে। এর দুই দিন পরই এই তল্লাশি।

সিবিআই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর তারা সিইএসের বিদেশি অনুদান নেওয়ার অনুমতিপত্র বা সনদ সাময়িকভাবে বাতিল করেছিল। এরপর মামলা করা হয়। এবার করা হলো তল্লাশি।

মান্দের গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এ ঘটনা আমাকে আরও দৃঢ় করেছে। আমার জীবন, কাজ ও লেখালেখিই এর উত্তর।’

মান্দেরের সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তাঁর সংস্থা ৩২ লাখ ৭১ হাজার রুপি তছরুপ করেছে। এফসিআরএ হিসাব থেকে ওই পরিমাণ অর্থ অন্য ব্যাংক হিসাবে সরানো হয়েছে। এসব করা হয়েছে আইন ভেঙে।

এ ধরনের ঘটনার অভিযোগে ভারতের অন্তত ছয় হাজার এনজিওর এফসিআরএ লাইসেন্স কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাময়িকভাবে বাতিল করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অক্সফাম ইন্ডিয়া, অ্যামনেস্টি ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাও।

হর্ষ মান্দেরের সংস্থায় তল্লাশির পর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আন্দোলনকর্মী প্রশান্ত ভূষণ ‘এক্স’ হ্যান্ডলে লেখেন, ‘সিবিআই হর্ষের বাড়ি ও কার্যালয়ে তল্লাশি করেছে। উনি একজন সুভদ্র, মানবিক আন্দোলনকর্মী। দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করছেন। তিনি সরকারের সমালোচক। সেটাই আক্রমণের উদ্দেশ্য। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে সরকারের সব সংস্থাকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মান্দেরকে আক্রমণের লক্ষ্য করায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন পিপলস ইউনিয়ন অব সিভিল লিবার্টিজের (পিইউসিএল) কবিতা শ্রীবাস্তব। বলেছেন, মান্দেরের মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার আন্দোলনের কর্মীকে এভাবে হয়রানি করায় তাঁরা বিচলিত।

ভোটের আগে সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্তে তারা গতি এনেছে। ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে ইডি গ্রেপ্তার করেছে। অনবরত সমন জারি করে চলেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। তাঁর শঙ্কা, ভোটের আগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।

বিহারের বিরোধী নেতা লালু প্রসাদ যাদব ও তাঁর ছেলে তেজস্বীকে বারবার জেরা করা হচ্ছে। ছত্তিশগড়, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রের বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। জেরা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে হুমকির মুখে দাঁড় করানো হয়েছে সামাজিক আন্দোলনকর্মীদের। বিরোধী নেতা ও আন্দোলনকর্মীদের অভিযোগ, সরকার একটাই বার্তা দিতে চায়, সমালোচনা কোনোভাবে বরদাস্ত করা হবে না।