সিপিএম নেতার সঙ্গে বিজেপি নেতাদের বৈঠক, ‘রাম-বামের’ মিল বলল তৃণমূল
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মন্ত্রী ও সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতা অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দার্জিলিয়ের সংসদ সদস্যসহ বিজেপির ১০ নেতার বৈঠক ঘিরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, এ নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ। তবে ক্ষমতাসীন তৃণমূল বলেছে, এ এক চক্রান্তের অংশ। রাম-বাম মিলে সরকার উৎখাত করতেই এ বৈঠক হয়েছে।
অশোক ভট্টাচার্য শিলিগুড়ি পৌর করপোরেশনের সাবেক মেয়র। উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে তাঁর বড় প্রভাব আছে। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য বিজেপির নেতৃত্বের একাংশ পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্য অথবা উত্তরবঙ্গকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু এ দাবির প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস বা বিজেপির নেতৃত্ব সমর্থন দিচ্ছিল।
চলমান এসব আন্দোলনের মধ্যেই দীপাবলীর দিন গত সোমবার শিলিগুড়িতে বিজেপির দার্জিলিং আসনের সংসদ সদস্য রাজু বিস্ত, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষসহ অন্তত ১০ বিজেপি নেতা হঠাৎ অশোক ভট্টাচার্যের বাসভবনে যান। সঙ্গে নিয়ে যান মিস্টি। বিজেপির এই নেতারা বেশ কিছু সময় অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলেন, মতবিনিময় করেন।
এ বৈঠকের পর অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ৩০ অক্টোবর তাঁর প্রয়াত স্ত্রীর প্রথম মৃত্যুবাষিকী। সেদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য অশোক ভট্টাচার্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না বলে তা জানাতে রাজু বিস্ত গিয়েছিলেন অশোক ভট্টাচার্যের শিলিগুড়ির বাড়িতে।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, বিজেপি বঙ্গভঙ্গের চক্রান্ত করছে। পাশাপাশি বিজেপির নেতারা ডিসেম্বরের মধ্যে এই রাজ্যের সরকার পতন হবে বলে যে আগাম ভবিষ্যদ্বাণী করে প্রচারে নেমেছেন, তার অংশ হিসেবেই বিজেপির নেতারা অশোক ভট্টাচার্যের শরণাপন্ন হয়েছেন।
কুণাল ঘোষ আরও বলেছেন, এই রাজ্যে তো সিপিএম এবং কংগ্রেস বিজেপির বি-টিম। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তো সেটি প্রমাণিত হয়ে গেছে।
এরপরই বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ তির্যক মন্তব্য টেনে বলেন, কাশফুল থেকে কোলবালিশ তৈরি করার অনুপ্রেরণা থেকে এই ধরনের কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটে।
আজ বুধবার অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যদি আমার বাড়িতে হঠাৎ আসেন, তাঁকে কি আমি বাড়িতে ঢুকতে দেব না?’ আর এরপরই কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেন, ‘সৌজন্যের নামে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা হচ্ছে।’