আসামে এনআরসি প্রক্রিয়ায় কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে

আসামে ‘বাংলাদেশি’ খুঁজতে ইতিমধ্যে খসড়া নাগরিকপঞ্জি হয়েছে।
ফাইল ছবি

ভারতের কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের আয় এবং ব্যয়ের হিসাব খুঁটিয়ে দেখার দায়িত্বে থাকা সংস্থা কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া (সিএজি) জানিয়েছে, নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসির তথ্যে প্রবল কারচুপি হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। গত সপ্তাহের শেষে একটি প্রতিবেদন আসামের বিধানসভায় জমা দিয়েছে সিএজি। সেখানেই এই মন্তব্য করে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বৈধ নাগরিক চিহ্নিতকরণের জন্য ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেনস বা এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা ২০১৯ সালের ৩১শে আগস্ট আসামে প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই তালিকা খতিয়ে দেখেই এই মন্তব্য করেছে সিএজি।

সিএজি বলেছে, নাগরিকপন্থী চূড়ান্তকরণের জন্য একটি অত্যন্ত নিরাপদ এবং বিশ্বাসযোগ্য কম্পিউটার সফটওয়্যারের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু গোটা পরিকল্পনাই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। মোট ২১৫টি সফটওয়্যার অত্যন্ত অগোছালোভাবে প্রধান সফটওয়্যারের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে সংগৃহীত তথ্যে কারচুপি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে এই তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের ধারাকে সংরক্ষণ করা হয়নি। এর ফলে সরকারের বিশাল টাকা খরচ হলেও কাজের কাজ হয়নি।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জি চূড়ান্ত করার কাজে হাত দিয়েছিল আসাম সরকার। এর লক্ষ্য ছিল সেই সমস্ত বেআইনি নাগরিক চিহ্নিতকরণ যারা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পরে রাজ্যে প্রবেশ করেছেন। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে যে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি প্রকাশিত হয় তাতে উনিশ লক্ষ মানুষের নাম বাদ যায়। ধরে নেওয়া হয় এরা ভারতের নাগরিক নন। বিষয়টিকে নানা স্তরে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন সাধারণ মানুষ। এখনো পর্যন্ত এই নাগরিক পঞ্জিকে মান্যতা দেয়নি ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল। সেই অবস্থায় কেন্দ্র সরকারের অডিট সংস্থার এই রিপোর্টটি প্রকাশ্যে এল।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, সরকার এই রিপোর্টটির জন্য অপেক্ষা করছিল। রিপোর্টটি জমা হওয়ার হওয়ার পরে এখন আমরা পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করব।