গেহলটপন্থী বিধায়কদের বিদ্রোহ, রাজস্থানে সংকটে কংগ্রেস

রাজস্থানে এর আগে ২০২০ সালে শচীন পাইলটের নেতৃত্বে বিদ্রোহের কারণে অশোক গেহলটের (ডানে) সরকারের পতনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল
ছবি: এএনআই

মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের অনুসারী ৯০ জনের বেশি বিধায়কের পদত্যাগের হুমকিতে রাজস্থানে আবার বিপাকে পড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার। বিদ্রোহী সব বিধায়কের একেকজনের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। খবর এনডিটিভির।

অশোক গেহলটের প্রতিদ্বন্দ্বী শচীন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হলে পদত্যাগের হুমকি দেন এসব বিধায়ক। সংকট নিরসনে জয়পুরে আছেন জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন ও মল্লিকার্জুন খাড়গে।

কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে জয়ী হলে শীর্ষ এই পদের জন্য হাইকমান্ডের পছন্দের তালিকায় আছেন অশোক গেহলট। কংগ্রেসের প্রধান হওয়ার দৌড়ে আছেন প্রভাবশালী নেতা শশী থারুর ও মনীশ তেওয়ারিও। তবে এই পদে এগিয়ে আছেন গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত গেহলট।

কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেও শচীন পাইলটের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে চাইছেন না অশোক গেহলট। এর আগে তিনি জানান, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হলেও মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই। তবে চলতি বছর উদয়পুরে দলের তিন দিনের সম্মেলনে ঘোষিত ‘এক নেতা এক পদ’ নীতির প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অনড় মনোভাবের কারণে শেষ পর্যন্ত অবস্থান বদলান মুখ্যমন্ত্রী গেহলট।

গতকাল রোববারের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে অশোক গেহলট বলেন, বিষয়টি তাঁর নিয়ন্ত্রণে নেই। বিধায়কেরা ক্ষুব্ধ এবং তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী পদে শচীন পাইলটকে সমর্থন দিতে প্রস্তুত নন। তবে গেহলটের এমন দাবি সত্ত্বেও তাঁর ইঙ্গিত ছাড়া বিষয়টি এত দূর গড়িয়েছে বলে মনে হয় না।

আরও পড়ুন

গতকাল সন্ধ্যায় জয়পুরে নাটকীয় এ পরিবর্তন ঘটে। রাজস্থানের কংগ্রেস বিধায়কদের একটি সভা করতে বলে কেন্দ্রীয় কংগ্রেস। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে উল্লেখ করে ওই সভায় একটি রেজল্যুশন পাস করতে বলা হয়।
কিন্তু উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বিধায়ক সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। অশোক গেহলটের অনুসারীরা আইনপ্রণেতা শান্তি ধারিওয়ালের বাসভবনে যান। তাঁরা কংগ্রেসের সংসদীয় দলের সভায় যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানান।

অশোক গেহলটের অনুগতদের থেকেই মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানিয়ে তাঁরা একটি রেজল্যুশন পাস করেন। ২০২০ সালে শচীন পাইলটের নেতৃত্বে বিদ্রোহের কারণে সরকার পতনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে গেহলটের পাশে ছিলেন এসব বিধায়ক। তাঁদের অপর দাবি হলো কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচনের আগপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে সংসদীয় দলের কোনো সভা যাতে না হয়।

আরও পড়ুন

পদত্যাগপত্র জমা দিতে বিধানসভার স্পিকার সি পি জোশির বাসভবনে যান কংগ্রেসের ৯২ জন বিধায়ক। স্পষ্ট যে এটা ছিল দাবি পূরণে দলের হাইকমান্ডের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল। শেষরাত পর্যন্ত বিধায়কেরা স্পিকারের বাসভবনে অবস্থান করেন। শেষ পর্যন্ত একটি উপায় খুঁজে বের করতে মুখ্যমন্ত্রী গেহলটের সঙ্গে দেখা করেন মাকেন, খাড়গে ও শচীন পাইলট।

রাজস্থানের ২০০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক ১০৭ জন। এ ছাড়া ১৩ জন স্বতন্ত্র বিধায়কেরও সমর্থন রয়েছে কংগ্রেস সরকারের প্রতি। স্বতন্ত্র বিধায়কদের অধিকাংশই আবার কংগ্রেসের সাবেক নেতা, যাঁরা গেহলটের সমর্থক। তাঁরাও গত সন্ধ্যায় ধারিওয়ালের বাসভবনে ছিলেন।