১০ লাখ চাকরি, সরকারি চাকরিতে নারীদের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ, একাকী নারী ও বয়স্কদের মাসিক ২ হাজার টাকা ভাতা, ৫০০ টাকায় রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ও ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনা মূল্যে দেওয়া ছাড়াও কংগ্রেস জানিয়েছে, ক্ষমতায় এলে আহমেদাবাদের অদূরে মোটেরায় নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের নাম বদলে সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের নামে রাখা হবে। ১৯৮৩ সালে তৈরি এই স্টেডিয়াম সংস্কারের পর ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নামে নামকরণ করা হয়। তার আগপর্যন্ত এটা ছিল সরদার বল্লভভাই প্যাটেলের নামে।
গতকাল শনিবার দুপুরে আহমেদাবাদে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেন ওই রাজ্যের ভোট তদারকির মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। ইশতেহারে বলা হয়, এই রাজ্যে বিজেপি লাগামহীনভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য পরিষেবার বেসরকারীকরণ করে চলেছে। ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস তা বন্ধ করবে। অশোক গেহলট বলেন, সেই সঙ্গে দল সাধারণ মানুষের আর্থিক সুরাহায় সচেষ্ট হবে।
গুজরাটের মোটেরায় আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়েছিল ১৯৮৩ সালে। ১৯৮৭ ও ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বহু খেলা ওই স্টেডিয়ামে হয়। ২০০৬ সালে স্টেডিয়ামটি প্রথমবার সংস্কার করা হয়। ২০২০ সালে দ্বিতীয়বার সংস্কারের সময় স্টেডিয়ামটির রূপ বদলানো হয়। ঠিক হয়, গড়ে তোলা হবে এক স্পোর্টস কমপ্লেক্স, ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি হবে তার অংশ। স্টেডিয়ামের আসনসংখ্যা বাড়িয়ে করা হয় ১ লাখ ৩২ হাজার। খরচ হয় ৮০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠান হয় এখানেই। পরের বছর স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নাম সরদার প্যাটেলের নামে রেখে ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নাম নরেন্দ্র মোদির নামে রাখা হয়। নতুন নামকরণ করেছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সেই থেকে এ নিয়ে বিতর্ক লেগেই রয়েছে। শনিবার কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিল ভূমিপুত্র সরদার প্যাটেলের নামে স্টেডিয়ামকে সমর্পিত করার।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কোনটি দান–খয়রাত বা ভুল অর্থনীতি এবং কোনটি দুর্বলদের ক্ষমতায়ন বা ঠিক অর্থনীতি, সেই বিতর্ক অব্যাহত। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলকে নীতি ঠিক করার জন্য চিঠি দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি রক্ষায় অর্থের জোগান কীভাবে হবে, তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। বিজেপি ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ওই উদ্যোগের বিরোধিতা করছে। দেখা যাচ্ছে, দান–খয়রাতি থেকে কোনো দলই সরে আসছে না। হিমাচল প্রদেশে বিজেপি যেমন সস্তায় চুলা, মেয়ে স্কুলপড়ুয়াদের সাইকেল, কলেজপড়ুয়াদের স্কুটি, কৃষকদের আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, বিরোধীরাও তেমন ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনা মূল্যে বিদ্যুৎ, ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মওকুফ, বেকার ও একাকী নারীদের ভাতা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। দান–খয়রাতের রাজনীতিতে আম আদমি পার্টি অন্যদের টেক্কা দিতে চাইছে। বিজেপি ও আম আদমি পার্টি অবশ্য এখনো গুজরাটের জন্য নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেনি।
গুজরাটে কংগ্রেস গত ২৭ বছর ক্ষমতার বাইরে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ক্ষমতায় এলে এই ২৭ বছরে রাজ্যের শাসকদের যাবতীয় দুর্নীতি তদন্ত করা হবে। দোষীদের শাস্তি দেবে। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সব রাজ্যবাসীর চিকিৎসা করা হবে বিনা মূল্যে। ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও ওষুধ বিনা মূল্যে। এ ছাড়া কোভিডে মৃত পরিবারে দেওয়া হবে ৪ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা।