ভারতে বিরোধীদের বাছাইয়ের সুযোগ না দিয়ে দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ

ভারতের নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দুই শূন্য পদে দুই সাবেক আমলাকে নিয়োগ দেওয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন নিয়োগ কমিটির প্রথম বৈঠকে আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয় সুখবীর সিং সান্ধু ও জ্ঞানেশ কুমারকে।

নিয়োগ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও লোকসভার বিরোধী নেতা কংগ্রেস সদস্য অধীর চৌধুরী।

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নতুন যে আইন করেছে, সে অনুযায়ী গঠিত কমিটির এটাই ছিল প্রথম বৈঠক। পুরোনো প্রথা অনুযায়ী, এই কমিটিতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী নেতা ও দেশের প্রধান বিচারপতি। নতুন আইনে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সেই জায়গায় আনা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোনো শীর্ষ নেতাকে।

এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যেসব মামলা হয়েছে আগামীকাল তার শুনানি হওয়ার কথা। তার আগেই আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নতুন আইনে গঠিত কমিটির প্রথম বৈঠকে কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হলো।

যেভাবে কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হলো, সেটাও বেশ মজার। কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখে কমিটির সদস্য বিরোধী নেতা অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, অনুসন্ধান কমিটির ঠিক করা নামগুলো বিবেচনার জন্য যেন আগে তাঁকে পাঠানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার অধীর চৌধুরী বলেন, বুধবার রাতে তিনি দিল্লি আসেন। এসে দেখেন তাঁকে মোট ২১২ আমলার নাম বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। এত অল্প সময়ে এতগুলো নাম বিবেচনা করা অসম্ভব। বৈঠক ডাকা হয়েছে দুপুরে। তাই বিবেচনার সময়ই ছিল না।

অধীর চৌধুরী বলেন, বৈঠক শুরুর ১০ মিনিট আগে তাঁকে বাছাই করা ছয়জনের নাম দেওয়া হয়। কমিটিতে সরকারের ইচ্ছাই প্রথম ও শেষ কথা। তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই বৈঠকে তিনি ভিন্নমত নথিবদ্ধ করিয়েছেন। যেভাবে কমিটি গঠিত হয়েছে, যেভাবে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়া হয়েছে, তিনি তার সমালোচনা করেছেন।

নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে অনুপ চন্দ্র পান্ডে অবসর নেন গত ফেব্রুয়ারিতে। অন্য কমিশনার অরুণ গোয়েল অজানা কারণে সম্প্রতি ইস্তফা দেন। সেই দুই জায়গায় যাঁরা মনোনীত হলেন তাঁরাও সাবেক আমলা। সুখবীর সিং সান্ধু বিজেপিশাসিত উত্তরাখন্ড সরকারের মুখ্য সচিব ছিলেন। এর আগে তিনি ছিলেন ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটির চেয়ারম্যান।

জ্ঞানেশ কুমার ছিলেন সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব। নরেন্দ্র মোদির আমলে এই মন্ত্রণালয় তৈরি হয়। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রথম মন্ত্রী অমিত শাহ। জ্ঞানেশ কুমার তখন থেকেই শাহর অনুগত।