আর ১২ মিটার টানেল খনন করলে মুক্তি মিলবে শ্রমিকদের
আটকে পড়া মানুষ ও তাঁদের মুক্তির মাঝে ব্যবধান আর মাত্র ১২ মিটার। এটুকু বাধা পেরোলেই সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিক মুক্তির স্বাদ পাবেন। সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে আগামীকাল বৃহস্পতিবারই সুখবর পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সরকারি কর্তৃপক্ষ।
ভারতের উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীতে নির্মাণাধীন সাড়ে ৪ কিলোমিটার সুড়ঙ্গের ভেতরে ভূমিধসের কারণে টানা ১১ দিন ধরে আটকা পড়ে আছেন এই শ্রমিকেরা।
উত্তরাখন্ডের পর্যটন বিভাগের বিশেষ আধিকারিক ভাস্কর খুলবে আজ বুধবার বিকেলে সংবাদমাধ্যমকে এই সুখবরটি দেন। তিনি বলেন, ‘আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে আরও ৬ মিটার এগোনো গেছে। পরেরবার যখন কাজ শুরু হবে, আশা করছি তখন শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৬৭ শতাংশ ড্রিলিং শেষ করা গেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অগার ড্রিলিং মেশিন যে আশানুরূপ কাজ করছে, সে কথা আগে জানিয়েছিলেন উত্তরাখন্ডের সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কর্তা মাহমুদ আহমেদ। তিনি বলেছিলেন, ধসে পড়ে সুড়ঙ্গের ৫৭ মিটার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। তার মধ্য থেকে ৩৯ মিটার অবমুক্ত করা গেছে। বাকি আর ১৮ মিটার। তিনি বলেছিলেন, ‘ধসের মধ্য দিয়ে ড্রিল করে ছোট সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। সেটা বিশেষ কঠিন কাজ নয়। কঠিন হচ্ছে সেই সুড়ঙ্গের মধ্যে ঢালাই করা বড় পাইপ ওয়েল্ডিং করে ঢোকানো, যাতে সেই পাইপের মধ্য দিয়ে শ্রমিকেরা হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন। পাইপ ঝালাই করতেই বেশি সময় লাগছে। কাজটা খুবই ঝক্কি ও সময়সাপেক্ষ।’
মাহমুদ আহমেদ জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত ১৮ মিটার পাইপ ঢোকাতে ১৫ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অগার মেশিনটি গত সপ্তাহে বেশ কয়েকবার বিকল হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণে তিন দিন কাজ বন্ধ রেখে বিকল্প উপায়ের সন্ধান করা হচ্ছিল। তবে মেশিনটি মঙ্গলবার থেকে নির্বিঘ্নে কাজ শুরু করেছে।
এর আগে কর্তৃপক্ষ অগার মেশিন নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছিল। সেই কারণে জানানো হয়েছিল, মেশিনটি ঠিকমতো কাজ করলে দু–তিন দিনের মধ্যে উদ্ধারকাজ শেষ করা যাবে। নইলে বিকল্প উপায়ে দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষ সব সময় যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁদের মনোবল অটুট রাখতে মনোবিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরি করে পাঠানো হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শমতো। আটক পড়া শ্রমিকেরা ওডিশা, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।