ইভিএম এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল ভারতের প্রধান তিন বিরোধী দল
ভারতে প্রথম দুই দফার ভোটের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে পৃথকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রধান বিরোধী তিন দল। এই দলগুলো হলো—তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সিস্ট (সিপিআইএম)।
প্রথমেই মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায় এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুই দফার ভোটের দুই সপ্তাহ এবং এক সপ্তাহ পরে শতাংশের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসেবে অভিহিত করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গত বুধবার এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘নির্বাচনের পরপরই ভোটের শতাংশের পরিসংখ্যান দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু গতকাল (৩০ এপ্রিল) দেখা গেল ভোটের চূড়ান্ত হার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এটা একটা বিরাট বৃদ্ধি, যা উদ্বেগজনক।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ভোটের শতাংশের বৃদ্ধি সেই এলাকাতেই হয়েছে, যেখানে মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পক্ষে ভোট দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রচুর সন্দেহ রয়েছে এবং কমিশনকে অবশ্যই এর উত্তর দিতে হবে।’
ইভিএম নির্মাতাদের সম্পর্কেও বিশদ তথ্য প্রকাশ করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল প্রধান। গত এক দিনের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস ও সিপিআইএমও।
কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, লোকসভায় নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা এবং সেই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে কী হারে ভোট পড়েছে, তা এখনো সঠিক তথ্যসহ প্রকাশে আনা হয়নি। সাধারণত ভারতের নির্বাচনে এটা করা হয়ে থাকে বলে মন্তব্য করেন রমেশ। ভোটের (বুথভিত্তিক) সংখ্যার বিভাজন এখনো দেওয়া হয়নি এবং শুধু ভোটের শতাংশের হারই যথেষ্ট নয় বলেন তিনি।
সিপিআই (এম)-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স পোস্টে সংশোধিত ভোটারের হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, চূড়ান্ত ভোটার উপস্থিতি প্রাথমিক পরিসংখ্যানের তুলনায় যথেষ্টই বেশি। কিন্তু কেন প্রতিটি সংসদীয় আসনে ভোটারদের নিরঙ্কুশ সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে না, তা বোঝা যাচ্ছে না। এই পরিসংখ্যান জানা না থাকলে শুধু শতাংশ-হার অর্থহীন।
তিনি দাবি করেন যে গণনার সময় মোট ভোটার সংখ্যা পরিবর্তন করা যেতে পারে। ফলে ফলাফল হেরফের হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইয়েচুরি আরও বলেন, ‘২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটারের সংখ্যা সব সময় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যেত। কমিশনকে অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে এবং এই তথ্য প্রকাশ করতে হবে।’