রমজানের আগে নাগরিকত্ব আইন চালু একধরনের প্ররোচনা: মমতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ সোমবার সন্ধ্যায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রমজান মাস শুরুর আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) চালু হতে পারে। এটা একধরনের প্ররোচনা।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের একটু পরেই কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। কারণ, তা সরকারি গেজেট আকারে ঘোষণা করা হয়েছে।

এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের যেসব মানুষ ভারতে এসেছেন, তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শুধু মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ পারবেন না। এই কারণেই আইনটি বিতর্কিত। এই আইন নিয়ে এরই মধ্যে আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে জনবিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা রোধ করতে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা গতকাল বলেছেন, সিএএ বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতীক বাতিল করতে আসাম সরকার নির্বাচন কমিশনে আবেদন জানাবে।

সিএএ বাস্তবায়নের ঘোষণার পরে আসামে বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা। কারণ আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রধানত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ মনে করছেন, সিএএ বাস্তবায়িত হলে আদিবাসী নন এমন মানুষ আদিবাসী অঞ্চলে জমি কিনতে পারবেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন। এতে জমির ওপরে তাঁরা তাঁদের দখল হারাবেন। যদিও এই আইনের আদিবাসী অঞ্চলে জমি কেনাবেচার ওপরে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন চার বছর ফেলে রাখার পরে এই সময় সিএ বাস্তবায়িত হতে চলেছে, তা আমরা বুঝতে পারি। সামনেই রমজান মাস শুরু হতে চলেছে, তারপরই আসছে দোল, তারপর রামনবমী। এই সময় এটা চালু করা হচ্ছে। কোনো প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি চাই না, রাজ্যে কোনো ঝামেলা হোক।’

এই আইনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গেও বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও বলেন, এই আইনের জেরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না, চিন্তা করবেন না। কারও যাতে অধিকার কেড়ে নেওয়া না হয়, তা আমি দেখব। এর আগে যখন পরিচয়পত্র আধার কার্ড বাতিল করার চেষ্টা হয়েছে, আমরা তারও বিরোধিতা করেছি। সাহস থাকলে ফেলে না রেখে চার বছর আগে কেন এই কাজ করা হলো না?’