থমথমে মণিপুরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
ছবি: এএনআই

ভারতের মণিপুর রাজ্যের পরিস্থিতি যথেষ্ট থমথমে থাকলেও গতকাল সোমবার বড় ধরনের কোনো সংঘাতের কথা সামনে আসেনি। নিরাপত্তার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল মণিপুরে পৌঁছেছেন। তিন দিনের সফরে তিনি মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।

মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার জন্য রাজ্যের হাইকোর্টের সুপারিশকে কেন্দ্র করে ৩ মে থেকে সহিংসতা চলছে। গতকালও নানা জায়গা থেকে গুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এতে কারও মৃত্যুর হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সরকার বা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

মণিপুরে সাম্প্রতিক সহিংসতায় রাজ্যের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো মদত দিচ্ছে—মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (কেএনও)। সংগঠনটি মণিপুরে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি গোষ্ঠীর সমন্বয়ক। তাদের দাবি, রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী সাম্প্রতিক সংঘাতের সঙ্গে যুক্ত নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, সহিংসতায় মদদ দেওয়ায় নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত ৩৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে।

কেএনওর মুখপাত্র শৈলেন হাওকিপ উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রচারমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সরকারের সঙ্গে ‘সাসপেনশন অব অপারেশন’ (অস্ত্রবিরতি) চুক্তির আওতায় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা শিবিরে রয়েছে। এই শিবিরগুলো (ভারতের) নিরাপত্তা বাহিনী মাঝেমধ্যেই পরিদর্শন করে। কিন্তু হঠাৎ এখন বলা হচ্ছে যে অস্ত্রবিরতির আওতায় থাকা জঙ্গিরা সহিংসতায় অংশ নিয়েছে। এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ কেএনওর মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বলে আসছেন, মণিপুরে জাতিগত নিধন চলছে।

কেএনও বর্তমানে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে একটি শান্তি আলোচনার মধ্যে রয়েছে। সেই শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়ায় তারা অস্ত্রবিরোধী চুক্তি করেছে। ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই অস্ত্রবিরতি চুক্তি করে কুকি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে। যদিও মণিপুর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গত মার্চ মাসে জানানো হয়েছিল, সেই চুক্তি খারিজ হয়ে গেছে। এ কারণে এখন সেই চুক্তি আছে কি না, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

ইতিমধ্যে দিল্লির একটি সংঘাত পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা রাইটস অ্যান্ড রিস্ক অ্যানালাইসিস গ্রুপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে এক আবেদনে বলেছে, মণিপুরে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন রয়েছে।