বুস্টার ডোজ শেষ হলেই ভারতে সিএএ বলবৎ

শুভেন্দু অধিকারী
প্রথম আলো

ভারতে করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) সারা দেশে বলবৎ করা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল মঙ্গলবার দিল্লিতে এই আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির এই বিধায়ক গতকাল দুপুর ১২টা নাগাদ সংসদ ভবনে গিয়ে অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্য রাজনীতি নিয়ে দুজনের মধ্যে পৌনে এক ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে বলে শুভেন্দু জানান।

সংসদ ভবন থেকে শুভেন্দু যান চাণক্যপুরীতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবাসন বঙ্গভবনে। সেখানে বিজেপির উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী পশ্চিমবঙ্গের সাবেক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, অমিত শাহ তাঁকে বলেছেন, করোনার বুস্টার ডোজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ‘রুল’ বা নিয়মবিধি চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। শুভেন্দু বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সরকার চাইছে ২০২৩ সালে সারা দেশে ওই আইন বলবৎ করতে।

শুভেন্দু বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তফসিলি জাতিভুক্ত নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব নিয়ে অযথা নানা হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়। বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়কে। এই সম্প্রদায় নির্বাচনে বিজেপিকে বিপুলভাবে সমর্থন করছে। তারা সিএএর পথ চেয়ে বসে রয়েছে। বিজেপিও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের উচিত দ্রুত সেদিকে নজর দেওয়া।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর পাস হয়। ১২ ডিসেম্বর আইনটি প্রণয়নের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তারপর সরকার জানিয়েছিল, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে আইনটি বলবৎ হবে। কিন্তু সেই আইনের নিয়মবিধি আজও চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা যায়নি। এর আগে সংসদে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানিয়েছিলেন, সিএএর নিয়মবিধি আটকে রয়েছে মহামারির জন্য। কোভিডের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই নিয়মবিধি তৈরি হয়ে যাবে।

সিএএ এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরি নিয়ে দেশে–বিদেশে প্রবলভাবে সমালোচিত হতে হয়েছে বিজেপি সরকারকে। আসামে নাগরিক পঞ্জি তৈরির কাজ শুরু হয়েও নানা জটিলতায় রূপায়িত হচ্ছে না। সারা দেশের জন্য জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরির প্রতিশ্রুতিও বিজেপি পালন করতে পারেনি। একইভাবে আইন তৈরি হলেও বলবৎ করা যায়নি সিএএ। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় কারণে দেশত্যাগে বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয়প্রার্থী হলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পারসি সংখ্যালঘুরা এই সুবিধা পাবেন। বিরোধীরা এই আইনকে সংবিধানের পরিপন্থী বলে মনে করেন। তাঁদের অভিযোগ, সরকার ধর্মীয় ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করতে পারে না। এই কাজ সংবিধানবিরোধী।