মোটরসাইকেলের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে হিঁচড়ে স্ত্রীকে ‘শাস্তি’ দিলেন স্বামী

ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া

এক নারীর দুই পা বাঁধা অবস্থায় তাঁকে রশি দিয়ে মোটরসাইকেলের সঙ্গে বেঁধে টেনে চলেছেন এক ব্যক্তি। ওই নারী তাঁকে বাঁচাতে চিৎকার করছেন। কিন্তু সেই মোটরসাইকেল এবড়োখেবড়ো ও পাথুরে সড়কের ওপর দিয়ে ছুটেই চলেছে।

এরপর ওই ব্যক্তি মোটরসাইকেলটি থামিয়ে ওই নারীর ওপর পা রেখে দাঁড়ান। ওই নারী তখন গুরুতর আহত। শারীরিক যন্ত্রণায় কাঁদছেন। আর মানসিকভাবে হতবিহ্বল অবস্থা। কিন্তু ওই ব্যক্তি কোমরে হাত রেখে নিজের কৃতকর্ম কতটা সফল হয়েছে, তা দেখছেন। ওই নারী তখন ওই ব্যক্তির পা জড়িয়ে ধরছিলেন।

সম্প্রতি ৪০ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। পরে জানা যায়, ওই নারী ওই ব্যক্তির স্ত্রী। আর স্ত্রীকে তিনি এটা ‘শাস্তি’ দিয়েছেন। অপরাধ হলো, মানা করা সত্ত্বেও স্ত্রী তাঁর বোনের কাছে যেতে চেয়েছিলেন। ঘটনাটি ভারতের রাজস্থান রাজ্যের নাগাউর জেলার।

এ ঘটনার ভিডিও ধারণকারীসহ সেখানে অন্তত তিনজন ছিলেন। কিন্তু কেউই ওই নারীকে রক্ষা করতে আসেননি। এমনকি গ্রামের একটি মানুষও আসেননি।

রাজ্যের ঝুনঝুনু, নাগাউর ও পালি জেলার গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই নারী জয়সালমীরে তাঁর বোনের কাছে যাওয়ার আবদার করেছিলেন।

স্থানীয় পুলিশ জানায়, বিষয়টি তদন্ত করা হবে। সূত্র এনডিটিভিকে জানান, প্রেম রাম মেঘওয়াল নামের ওই ব্যক্তি বেকার ও মাদকাসক্ত।

এ ঘটনায় এফআইআর করা হয়েছে। একই সঙ্গে যে ব্যক্তি ভিডিও করেছেন, তাঁকেও আইনের আওতায় আনা হবে, কেন তিনি সেই মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকাননি।

পুলিশ এই ব্যক্তিকে গতকাল সোমবার হেফাজতে নিয়েছে এবং ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ওই নারী এখন জয়সালমীরে আছেন।

নাগাউরের পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট নারায়ণ তোগাস এনডিটিভিকে বলেন, ‘আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী তাঁর বোনের কাছে যেতে চাওয়ায় তাঁদের মধ্যে কিছু বিবাদ হয়। আমরা ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি...তিনি নাগাউরে আসছেন। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়, পঞ্চৌদি পুলিশ স্টেশনের সহকারী উপপরিদর্শক সুরেন্দ্র কুমার বলেন, প্রায় এক মাস আগে নাহারসিংহপুরা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ওই নারী এখন তাঁর পরিবারের সঙ্গে আছেন। তবে তিনি এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।

সূত্র জানায়, মাদকাসক্ত মেঘওয়াল প্রায়ই তাঁর স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন এবং গ্রামের মানুষের সঙ্গে মিশতে দিতেন না।