পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ ধরা পড়ছে, আকারও ভালো

কাকদ্বীপে সাগরের উপকূলে ইলিশ হাতে জেলেরাছবি: ভাস্কর মুখার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুই মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৫ জুন ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র উপকূল এলাকায় প্রথম দিকে কম মিললেও গতকাল বুধবার ইলিশ আসতে শুরু করেছে।

গতকাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মাছের বাজারে প্রথম ২৫ টন ইলিশের বড় চালান আসে। ইলিশের আকার দেখে খুশি জেলেরা। কারণ, এই ইলিশের আকার বেশ বড়। সাধারণত জুলাইয়ে আটবার সাগরে ইলিশ ধরতে যান জেলেরা। কিন্তু এবার সেভাবে ধরা পড়েনি ইলিশ। গতকাল পঞ্চমবারের মতো যাওয়া জেলেরা প্রথম ২৫ টন মাছ নিয়ে ফিরেছেন।

সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী সংগঠনের এক নেতা সাংবাদিকদের বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে আরও হাজারখানেক ট্রলার সাগর থেকে মাছ নিয়ে ফিরবে। তারা ইতিমধ্যে উপকূলের উদ্দেশ্যে মাছ নিয়ে রওনা হয়েছে। প্রতিটি ট্রলারে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ রয়েছে। ফলে ওই সব ট্রলার মাছ নিয়ে আসার পর বাজারে মিলবে ইলিশ।

চার বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের সাগরে তেমন ইলিশ মিলছে না। গত বছর কিছু মিলেছিল। তাই এবার রাজ্য সরকার ইলিশ ধরার ওপর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই সময়কালে ইলিশের ডিম থেকে পোনা উৎপাদিত হয়। নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ১৫ জুন শেষ হলে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে নেমে পড়েন।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার এই জেলার অন্তত সাড়ে তিন হাজার মাছ ধরার ট্রলার সাগরে ইলিশ ধরতে নামছে।

ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, ইলিশের মৌসুমে এবার পশ্চিমবঙ্গে ১১ হাজারের বেশি ট্রলার ইলিশ ধরতে সাগরে নামতে পারে। এরই মধ্যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সাত হাজার ধরার ট্রলার রয়েছে। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘাসহ অন্যান্য সমুদ্র এলাকার মৎস্যজীবীদেরও ট্রলার রয়েছে।

ইতিমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, রায়দিঘি, কুলতলী, পাথর প্রতিমা, সাগরদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, বকখালি, ফলতা, হরিরামপুর, সীতারামপুর, নৈনানের অন্তত দুই হাজার মাছ ধরার ট্রলার ইলিশ ধরতে সমুদ্রে নেমেছে। এ ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণি, তাজপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার সমুদ্র উপকূলের  কয়েক শ জেলেও ট্রলার নিয়ে ইলিশ ধরতে সাগরে গেছেন।

মৎস্যজীবীরা আশা করছেন, এবার সাগরে ভালো ইলিশ পাওয়া যাবে। কারণ, ঘূর্ণিঝড় রিমেলের প্রভাবে ভালো বৃষ্টি হয়েছে। এখনো বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলছে। তাই বর্ষা নামার আগেই সমুদ্রের জলের নোনা ভাব অনেকটা কেটে যাবে। পুবালি বাতাসও বইতে শুরু করবে শিগগির।