সেই অঞ্জুর ‘দোষে’ ভারতে কাজ হারালেন বাবা-ভাই-স্বামী
ফেসবুকের মাধ্যমে পাকিস্তানি নাগরিক নাসরুল্লাহর সঙ্গে ভারতের রাজস্থানের বাউনা গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জুর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সম্প্রতি ভারতীয় এই গৃহবধূ পাকিস্তানে পালিয়ে যান। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, নাসরুল্লাহকে বিয়ে করেছেন অঞ্জু। এ ঘটনার পর থেকে অঞ্জুর পরিবার স্থানীয় বাসিন্দাদের তোপের মুখে পড়েছে।
অঞ্জুর স্বামীর কর্মপ্রতিষ্ঠান তাঁকে কাজ না দিয়ে বাড়িতে বসিয়ে রেখেছে। তাঁর ভাইকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাঁর দরজি বাবাকে স্থানীয় মানুষ আর পোশাক তৈরির কাজ দিচ্ছেন না।
পরিবারটির ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির সূত্রে জানা গেছে, অঞ্জু পালিয়ে যাওয়ার পর শুরুতে বাবা গয়া প্রসাদ টমাসের প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা সহানুভূতি দেখিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তা কেন বৈরিতায় রূপ নিল, তা জানা যায়নি। লোকজন এখন আর গয়া প্রসাদকে কাজ দিচ্ছে না। তাঁর দরজি দোকান এখন বন্ধ হওয়ার পথে।
গত ২০ জুলাই বাড়ি ছেড়ে চলে যান অঞ্জু। যাওয়ার আগে স্বামী আর সন্তানদের (১৫ ও ৬ বছর বয়সী) তিনি বলেছিলেন জয়পুর যাবেন। সেখান থেকে শিগগিরই বাড়ি ফিরবেন বলেছিলেন। তবে তা না করে অঞ্জু বৈধ ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে চলে যান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, তিনি তাঁর নাম পরিবর্তন করে ফাতিমা রেখেছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে বন্ধুত্ব হওয়া নাসরুল্লাহকে বিয়ে করেছেন।
খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর বাউনার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা মনে করেন, অঞ্জুর এমন কর্মকাণ্ডের কারণে তাঁদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, অঞ্জু যদি ভারতে ফিরেও আসেন, তাহলে তাঁকে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হবে।
অঞ্জু পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পর তাঁর ভাই ডেভিড টমাস চাকরি হারিয়েছেন। রাজস্থানের ভিওয়াদি এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তিনি। অঞ্জুর স্বামী অরবিন্দ মিনাও একই এলাকায় অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তাঁকেও তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি যেন বাড়িতেই থাকেন। তিনি যেন কোথাও কোম্পানির নাম উল্লেখ না করেন। তবে এ সময় অরবিন্দকে বেতন দেওয়া হচ্ছে কি না, তা জানা যায়নি।
অঞ্জুর পাকিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্রা। এ ঘটনার সঙ্গে বিদেশি উসকানি আছে কি না, তা–ও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।