সিঙ্গুর থেকে টাটাকে তাড়িয়েছে সিপিএম, মমতার মন্তব্যে ক্ষোভ রাজনীতিকদের
এ একেবারে উলট পুরাণ। পশ্চিমবঙ্গের সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়ার সময় অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মমতা এবার বললেন, সিঙ্গুর থেকে তাঁরা টাটাকে তাড়াননি। তাড়িয়েছে সিপিএম।
মমতার এ কথায় স্তম্ভিত রাজ্যের রাজনীতিকেরা।
গতকাল বুধবার রাজ্যের শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে দলের এক বিজয় সম্মিলনীতে যোগ দিয়ে হঠাৎ মমতা বলেন, ‘কেউ কেউ আজ বাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে, আমি টাটাকে তাড়িয়ে দিয়েছি। টাটা চাকরি দিচ্ছিল। তবে টাটাকে আমি তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে।’ এরপরই তিনি সিপিএমের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা জোর করে মানুষের জমি দখল করতে গিয়েছিলেন। আমি জমি তাদের ফেরত দিয়েছি।’
টাটাকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া করার সময় ক্ষমতায় ছিল সিপিএম। আর অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে রাজ্যের ক্ষমতা দখল করেছিলেন মমতা।
সিপিএমের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার সিঙ্গুরে টাটাকে এক লাখ মূল্যের ছোট গাড়ি ন্যানো নির্মাণের কারখানা গড়ার জন্য ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে ৯৯৭ একর জমি লিজ দিয়েছিল। আর ওই বছরই ১৮ মে টাটার কর্ণধার রতন টাটা সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়ার জন্য প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর টাটাকে জমি দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন মমতা।
আন্দোলনের মুখে ২০০৮ সালের অক্টোবরে সিঙ্গুর ছাড়ার আগে রতন টাটা বলেছিলেন, ‘বন্দুক ঠেকালেও আমি যাব না, ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু মমতা তো ট্রিগার টিপে দিলেন।’
গতকাল টাটা নিয়ে মমতার বক্তব্যে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘মমতা তো সেদিন জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে এ রাজ্যের শিল্প–সম্ভাবনা আর তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। আজ তিনি মিথ্যা বলতে বলতে এমন স্থানে পৌঁছে গেছেন যে তাঁর কাছে এখন মিথ্যা বলাটা সত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘মিথ্যায় ওঁর ডক্টরেট পাওয়া উচিত।’
রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদী রাজনীতিক। কখনো তথ্যনির্ভর কথা বলেন না।’