সীমান্ত নিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক নয়

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
ছবি: এএফপি

সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ভারত ও চীন সম্পর্কে শান্তি আসবে না বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানের মাঝে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই মন্তব্য করে গতকাল শুক্রবার তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি যেমন, তাতে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না। তিনি বলেন, সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ এবং পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।

পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দুই বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে কমান্ডার পর্যায়ে ১৬ বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখনো সংঘর্ষ-পূর্ববর্তী স্থিতাবস্থা ফেরেনি প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়। চীনা বাহিনী তাদের অবস্থানে ফেরত যায়নি। এই অবস্থার কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন যদি সীমান্তের শান্তি নষ্ট করে, তা হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে তার প্রভাব পড়বেই। এ কথা তাদের বারবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক মোটেই স্বাভাবিক নয়। স্বাভাবিক হতেও পারে না। কারণ, সীমান্ত পরিস্থিতি অস্বাভাবিক।’

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি এখন কেমন তা জানিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘দুই বছর ধরে ভারতীয় বাহিনী জমি আঁকড়ে আছে। এতে স্পষ্ট আমরা কতটা প্রস্তুত, বাহিনী কত দক্ষ ও আমাদের মনোবল কেমন দৃঢ়। মুখোমুখি অবস্থান থেকে বেশ কিছু জায়গায় আমরা সরে এসেছি। কিন্তু কিছু জায়গা থেকে চীন এখনো সরেনি।’

পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে চীন তার ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ (বিআরআই) প্রকল্পের অন্তর্গত ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরি করছে। এ প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, ভারত শুরু থেকেই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে চলেছে। আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু চীন কর্ণপাত করেনি। এই প্রকল্প ভারতের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে। এ ধরনের আচরণ কখনো সম্পর্ককে ভালো করতে পারে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সাম্প্রতিক তাইওয়ান সফরে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। চীন তাইওয়ান প্রণালিতে সামরিক মহড়া চালিয়েছে। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার ভারত প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো ভারতও ঘটনাবলিতে উদ্বিগ্ন। আমরা চাই আচরণ সংযত হোক, স্থিতাবস্থার একতরফা পরিবর্তনের চেষ্টা বন্ধ হোক, উত্তেজনা প্রশমিত হোক ও এলাকায় শান্তি থাকুক।’ প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখপাত্র চীন বা তাইওয়ান কোনো দেশের নাম উচ্চারণ করেননি। ‘এক চীন’ নীতিরও উল্লেখ করেননি।