ভূমিধসের জন্য জোশিমঠের সেনাছাউনি থেকে বেশ কিছু জওয়ান ও ইউনিট অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কত সেনা, কোন ধরনের সমরসম্ভার, কোন ইউনিট কোথায় সরানো হয়েছে, সে বিষয়ে সেনাপ্রধান মনোজ পান্ডে অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানাননি। সেনা প্রস্তুতি নিয়ে এক অনুষ্ঠানে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, সেনাছাউনির অন্তত ২০টি ইউনিট ভূমিধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাবধানতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জোশিমঠের সেনাছাউনি থেকে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দূরত্ব সবচেয়ে কম। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে যাতে ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা যায়, সে জন্য উত্তরাখন্ডের পার্বত্য এলাকার রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও সায় রয়েছে।
উত্তরাখন্ডজুড়ে সড়ক চওড়া প্রকল্প, চার হিন্দু তীর্থস্থানের মধ্যে সড়ক সংযোজন, একাধিক জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং বেহিসেবি নগরায়ণের দরুন ভূমিধসের আতঙ্ক চেপে বসেছে। গোটা জোশিমঠের ২৫ শতাংশ বাড়ি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে কর্ণপ্রয়াগ নগরেও। ভূমিধসের আতঙ্ক গেড়ে বসেছে সেনাছাউনিতেও। সেনাপ্রধান বলেন, প্রয়োজনে আরও ইউনিট অন্যত্র সরানো হতে পারে। তবে এ কারণে বাহিনীর যুদ্ধপ্রস্তুতি কোনোভাবে ব্যাহত হবে না।
জোশিমঠের অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গতকাল এক বৈঠক করেন। সেনাশিবির ছাড়াও জোশিমঠে রয়েছে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) ছাউনি। এই আধা সামরিক বাহিনী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। সেনাছাউনির মতো সেখানেও বেশ কিছু ঘরবাড়িতে বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফাটল ধরেছে সীমান্তমুখী সড়কেও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরিস্থিতির খুঁটিনাটি এই বৈঠকে পর্যালোচনা করেন।
ভূমিধসের কারণে জোশিমঠের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন ভারী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া হলেও গভীর রাতে চুপিসারে কাজ চালানো হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে ধরা পড়েছে কীভাবে গভীর রাতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলছে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বা সরকারি সড়ক নির্মাণ সংস্থার কর্তারা অবশ্য এখনো দাবি জানাচ্ছেন, তাঁদের কাজ এই ভূমিধসের কারণ নয়।